Onion Harvest

বর্ষাতি পেঁয়াজ চাষ বাড়ছে

দফতর সূত্রে খবর, এ বছর জেলায় প্রায় ২,০০০ বিঘা জমিতে বর্ষাতি পেঁয়াজ চাষ শুরু হচ্ছে। সে জন্য প্রায় ৩,০০০ চাষিকে পেঁয়াজ চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৪ ০৯:১৩
বর্ষাতি পেঁয়াজের।

বর্ষাতি পেঁয়াজের। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যকে পেঁয়াজ চাষে স্বাবলম্বী করতে পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল বর্ষাতি পেঁয়াজের চাষ। বাঁকুড়া জেলায় ধীরে ধীরে সেই চাষ ছড়িয়ে পড়ছিল। কিন্তু অতিমারির সময় থেকে হঠাৎ ওই চাষ নিয়ে জেলা উদ্যানপালন দফতরের সক্রিয়তায় কমে যাওয়ায় বর্ষাতি পেঁয়াজ চাষে ভাটা পড়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কৃষকেরা। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সক্রিয়তা ফিরেছে।

Advertisement

দফতর সূত্রে খবর, এ বছর জেলায় প্রায় ২,০০০ বিঘা জমিতে বর্ষাতি পেঁয়াজ চাষ শুরু হচ্ছে। সে জন্য প্রায় ৩,০০০ চাষিকে পেঁয়াজ চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। খাতড়া ও বাঁকুড়া সদর মহকুমার প্রায় প্রতিটি ব্লক এবং বিষ্ণুপুর মহকুমার জয়পুর ও কোতুলপুর ব্লকে বর্ষাতি পেঁয়াজ চাষের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বরূপা সেনগুপ্ত বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই বর্ষাতি পেঁয়াজ চাষে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছি আমরা। চাষিরা এ ব্যাপারে খুবই উৎসাহী। জমি তৈরির কাজ চলছে।”

২০১৬ সালে বর্ষাতি পেঁয়াজ চাষ শুরু বাঁকুড়ায়। ছাতনার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা বর্তমানে হর্টিকালচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের অধিকর্তা শুভাশিস বটব্যাল ওই চাষে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। উদ্যানপালন দফতর সূত্রে খবর, ২০১৬ সালে জেলায় প্রায় ৩০০ বিঘা, ২০১৭ সালে প্রায় ৬৫০ বিঘা, ২০১৮ সালে প্রায় ৯৫০ বিঘা ও ২০১৯ সালে প্রায় ১,৩০০ বিঘা জমিতে বর্ষাতি পেঁয়াজের চাষ হয়েছিল। জল দাঁড়ায় না এমন উঁচু জমিতেই বর্ষাতি পেঁয়াজের চাষ করা যায়। বাঁকুড়ায় এমন জমি যথেষ্ট। এই চাষে বিঘা পিছু প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করে দ্বিগুণ লাভের সম্ভাবনা। চাষিরাও বিকল্প চাষ হিসেবে বর্ষাতি পেঁয়াজে আগ্রহী হন। তবে ২০২০ সাল থেকে হঠাৎ দফতরের সক্রিয়তা বন্ধ হয়ে যায়। কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বরূপা বলেন, “জেলায় বর্ষাতি পেঁয়াজ চাষ সফল হয়েছিল। কেন তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল জানি না। তবে নতুন করে আমরা শুরু করতে চলেছি।” জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক দেবাশিস মান্না বলেন, “অতিমারি পরিস্থিতিতে কোনও কাজ করা যায়নি, এটা একটা কারণ হতে পারে। তবে এ বার রেকর্ড পরিমাণে পেঁয়াজ চাষই লক্ষ্য।”

শুভাশিস বটব্যাল বলেন, “বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া-সহ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেও বর্ষাতি পেঁয়াজ বড় আকারে চাষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ওই পেঁয়াজের বীজও রাজ্যে তৈরি করা হবে। সেই উদ্যোগও আমরা নিচ্ছি।”

বাঁকুড়ার বর্ষাতি পেঁয়াজের চাষি অশোক মাজি, সুমন্ত টুডু বলেন, “আগে আমরা অনেকখানি জমিতে বর্ষাতি পেঁয়াজের চাষ করছিলাম। তখন পেঁয়াজ বিক্রির পাশাপাশি বাড়িতেও ব্যবহার করতে পারতাম। দফতর উদ্যোগী না হওয়ায় গত কয়েক বছর চাষ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ বার নতুন করে আবার শুরু হচ্ছে জেনে আমরা খুব খুশি।”

আরও পড়ুন
Advertisement