আলিপুর আদালত চত্বরে সন্দীপ ঘোষকে ঘিরে হুলস্থুল। ছবি: সংগৃহীত।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করানোর সময়ে হুলস্থুল পরিস্থিতি আলিপুর আদালত চত্বরে। সোমবার রাতে গ্রেফতার করার পরে মঙ্গলবার দুপুরে নিজাম প্যালেস থেকে আদালতে তাঁকে নিয়ে আসে সিবিআই। এর পরে আদালত সন্দীপকে আট দিন সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। সেই পর্ব মিটে যাওয়ার পরে সন্দীপকে আদালত থেকে বার করার সময়েই শুরু হয় গোলমাল। ‘চোর চোর’ চিৎকার করে একদল মানুষ সন্দীপের দিকে এগিয়ে যায়। লেগে যায় হুড়োহুড়ি। সেই সময়েই কোনও এক জন সন্দীপের মাথায় পিছন থেকে থাবড়া কষায়। তবে কে এই থাবড়া কষিয়েছেন, ভিড়ের মধ্যে তা বোঝা যায়নি। এর পরে অবশ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্দীপকে নিয়ে গাড়িতে ওঠেন সিবিআই কর্তারা। তাঁকে ফের নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকেই সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এর পরে তিনি নিজে থেকে ইস্তফা দেওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সন্দীপকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়। কিন্তু সেখানে তিনি ঢুকতে পারেননি পড়ুয়াদের ক্ষোভে। শেষে নিয়োগপত্র ফিরিয়ে নিতে হয় রাজ্য সরকারকে। এর পরে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে গেলে ১৬ দিন জেরা করা হয় সন্দীপকে। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিবিআই। সেই মামলাতেই সন্দীপকে গ্রেফতার করা হয় সোমবার।
সন্দীপের উপরে জনরোষ যে রয়েছে তা টের পেয়েই প্রথম থেকে সতর্ক ছিলেন সিবিআই কর্তারা। তাই সোমবার তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়ার সময়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার আদালতে হাজির করানোর সময়েও সিবিআই কর্তারা একেবারে জাপটে ধরে ছিলেন সন্দীপকে। কিন্তু তার মধ্যেও থাপ্পড় খেতে হল।
মঙ্গলবার আদালতে সন্দীপকে নিয়ে গাড়ি ঢুকতেই শুরু হয় বিক্ষোভ। গাড়ির বনেটের উপরে নিজেদের ক্রোধ উগরে দেন অনেকে। গাড়ির বনেট থেকে জানলা চাপড়াতে থাকেন। এর মধ্যেও সুরক্ষিত ভাবেই আদালতে পেশ করা হয়। কিন্তু বার করার সময়ে সেই সুরক্ষা বলয় ভেদ করে একদল মানুষ এগিয়ে যায় সন্দীপের একেবারে কাছে। ‘চোর চোর’ স্লোগানের মধ্যেই শুরু হয় ধ্বস্তাধ্বস্তি। তখনই কেউ সন্দীপকে থাপ্পড় কষান।