আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বাঁশি, সুদর্শন চক্রের সঙ্গে প্ল্যাকার্ড হাতে পথে নেমেছে ছোট ছোট ‘কৃষ্ণ’রা। —নিজস্ব চিত্র।
জন্মাষ্টমীতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। প্রতি বছরই এই দিনটিকে নানা ভাবে পালন করে পরিষদ। এ বার অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে সাফল্যের প্রচারই ছিল পরিকল্পনা। গোটা দেশে তা হলেও বাংলায় অন্য রকম কর্মসূচি নেয় পরিষদ। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কৃষ্ণ সাজো কর্মসূচি নেওয়া হয়। শুধু পরিষদই নয়, সঙ্ঘ পরিবারের অন্য সংগঠনও সেই কর্মসূচিতে অংশ নেয়। আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদে অংশ নিতে পরিষদের কৃষ্ণদের হাতে বাঁশি বা সুদর্শন চক্রের পাশাপাশি রইল প্ল্যাকার্ড। লেখা, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। আবার কোনও কোনও কৃষ্ণের হাতে ‘সম্ভবামী যুগে যুগে’ লেখা প্ল্যাকার্ডও ছিল।
আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চাইতে পরিষদ যে পথে ছোট ছোট ‘কৃষ্ণ’ নামাতে চায় তা আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। সেই মতোই কলকাতা-সহ সব জেলাতেই কর্মসূচি হয় বলে পরিষদের দাবি। তবে সর্বত্র তারা নিজেরা না করলেও অন্যান্য সংগঠন, বিভিন্ন মন্দির কমিটি কৃষ্ণ সাজো কর্মসূচি পালন করে। পরিষদের নির্দেশ ছিল, ব্রজের রাধাকান্ত নন, ‘বীর’ এবং ‘নারীর সম্ভ্রম রক্ষাকারী’ কুরুক্ষেত্রের কৃষ্ণ সাজতে হবে। যে কৃষ্ণের এক হাতে সুদর্শন চক্র এবং অন্য হাতে পাঞ্চজন্য শঙ্খ। তবে অনেক জায়গাতেই বাঁশি হাতে কৃষ্ণ সাজে ছোটরা। তবে সকলের পোস্টারেই ছিল বিচারের দাবি। এই প্রসঙ্গে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘এখনকার পরিস্থিতি অনুযায়ী, রাধাকান্ত কৃষ্ণের চেয়ে বেশি দরকার কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনকে পথ দেখানো কৃষ্ণের। এটাই আমরা বলতে চাই। যিনি দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের সময়ে স্বয়ং কৃষ্ণার সম্মানরক্ষা করেছিলেন।’’
জন্মাষ্টমীর কর্মসূচিতে অংশ নেয় সঙ্ঘ পরিবারের সাংস্কৃতিক শাখা সংস্কার ভারতী। সংগঠনের পক্ষে তিলক সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘শুধু আমাদের উদ্যোগেই রাজ্যের ১২ জেলার ৪২ জায়গায় এক হাজারের মতো শিশু কৃষ্ণ সাজে। খুদেরা কেউ বংশীধারী, কেউ সুদর্শনচক্রধারী কেউ বা গোঠের রাখাল সাজে। ননীচোরা, বাল গোপাল এমনকি, কালীয়নাগ দমনকারী কৃষ্ণও সাজে অনেকে। তবে আমরা এ বার সেই শিশু কৃষ্ণদের মাধ্যমেও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছি।’’