Mamata Banerjee

রাজ্যপাল বোস অনুমতি না দেওয়ায় স্বাধীনতা দিবসে বন্দিমুক্তি হল না, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতার

সোমবার স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন সন্ধ্যায় বেহালায় আয়োজিত ‘ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট’ কর্মসূচিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৩ ২০:৩৪
(বাঁ দিকে) সিভি আনন্দ বোস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) সিভি আনন্দ বোস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত এখন আর রাজ্য রাজনীতিতে কোনও নতুন বিষয় নয়। সোমবার স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্-সন্ধ্যায় বেহালায় আয়োজিত ‘ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট’ কর্মসূচিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ করলেন, রাজ্যপালের কারণেই এ বছর স্বাধীনতা দিবসে রাজ্যে কোনও বন্দিমুক্তি হল না। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগকে সিলমোহর দিয়ে কারামন্ত্রী অখিল গিরি জানিয়েছেন, এ বারের স্বাধীনতা দিবসে কোনও বন্দিকে ছাড়া হচ্ছে না।

Advertisement

অভিযোগের সুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কাল বন্দিমুক্তি করব বলে প্রায় ৮০-৮৫ জনের নাম পাঠালাম। যে কোনও ফাইল পাঠাব, হয় সিএস (মুখ্যসচিব)-কে ডাকবে, নয় ডিজি (রাজ্য পুলিশের নির্দেশক)-কে ডাকবে। নয় আমাকে ডাকবে। সবাই যেন ওঁর চাকর-বাকর, তিনি যখন ডাকবেন যেতে হবে। সকাল ৬টায় বললে চলে যেতে হবে। রাত ১০টায় ফোন করে বলবেন, ‘চলে এসো’, চলে যেতে হবে। কেন?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনি মাননীয় রাজ্যপাল, আমি আপনাকে সম্মান করি। রাজার পার্ট আপনি করুন। প্রজার পার্ট করতে যাবেন না। প্রজার পার্ট করবে জনগণ। আগামী দিনে এটা নিয়ে আমাদের ফাইট করতে হবে।’’

প্রসঙ্গত, প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসের দিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলে বন্দিদের আচরণের ভিত্তিতে মুক্তি দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে দীর্ঘ কাল ধরেই। সেই রীতি মেনেই এ বছর নবান্ন থেকে বন্দিমুক্তির তালিকা পাঠানো হয় রাজভবনে। নিয়মানুযায়ী, স্বরাষ্ট্র দফতর মারফত বন্দিদের নামে তালিকা পাঠানো হয় রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য। রাজ্যপাল সেই ফাইলে অনুমোদন দিলে, সেই ফাইল পাঠানো হয় কারা দফতরে। ফাইলে থাকা নামের তালিকা দেখে বিভিন্ন জেলের বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয় স্বাধীনতা দিবসের দিন। এ বারও সেই নিয়মেই নবান্ন থেকে নামের তালিকা পাঠানো হয়েছিল রাজভবনে। নবান্ন সূত্রে খবর, সেই ফাইলে অনুমোদন দেয়নি রাজভবন। তাই এ বারের স্বাধীনতা দিবসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বন্দিমুক্তির কাজ করতে পারছে না। সেই ক্ষোভই উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

পাশাপাশি কারামন্ত্রী জানিয়েছেন, বন্দিমুক্তি সংক্রান্ত কোনও ফাইল তাঁর দফতরে আসেনি। তাই এ বছর স্বাধীনতা দিবসে কোনও জেল থেকেই কোনও বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। তবে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগের পাল্টা রাজভবনের জবাব জানতে চেয়ে একাধিক বার ফোন করা হলেও জবাব মেলেনি। হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠানো হলেও, তার উত্তর দেওয়া হয়নি।

শুধু মাত্র বন্দিমুক্তি নিয়েই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার নিয়োগ নিয়ে বিলম্বের জন্য রাজ্যপালকে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আজ কত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রেজিস্ট্রার নেই। আমরা আইন পাশ করলাম অ্যাসেম্বলিতে দু’বার। রাজ্যপাল সই-ই করেন না। নিজের ইচ্ছে মতো কেরল থেকে লোক নিয়ে আসছে্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি (উপাচার্য) হতে গেলে অন্তত ১০ বছরের অধ্যাপনায় অভিজ্ঞতা চাই। তিনি কেরল থেকে এক জন আইএএস না আইপিএসকে নিয়ে এলেন। যেন এটা পকেটের সম্পত্তি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আগে ব্রিটিশরা এটা কেন করেছিল, তখন মাত্র তিনটে ইউনির্ভাসিটি ছিল। আমরা এখন ৪৬টি ইউনির্ভাসিটি করে দিয়েছি। এ বার কী করেছেন, ইউনির্ভাসিটির নামে একটা ডেডিকেটেড ফোন করেছেন। করে নিজের বাড়িতে রেখে দিচ্ছেন। কাউকে পাঠিয়ে বলা হচ্ছে, 'আমি একে পাঠালাম, বিষয়টা দেখে দিন'। এমনই সব কাজ করে বেড়াচ্ছেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement