Potato price hike

আরও বাড়তে পারে আলুর দাম! মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রফাসূত্র অধরা, ধর্মঘটের পথে পাইকারি ব্যবসায়ীরা

আলু ‘রফতানি’র ক্ষেত্রে সীমানায় পুলিশি ‘কড়াকড়ি’র প্রতিবাদে সোমবার রাত থেকে রাজ্য জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। আশঙ্কা, এর ফলে ফের আলুর আকাল দেখা দিতে পারে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৬
আলুর দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা খোলাবাজারে।

আলুর দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা খোলাবাজারে। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্নার উপস্থিতিতে সোমবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও মিলল না রফাসূত্র। ভিন্‌রাজ্যে আলু পাঠানোর ক্ষেত্রে কড়াকড়ি শিথিল করা হতে পারে, সরকারের তরফে এমন আশ্বাস না-মেলায় সোমবার রাত থেকেই ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে অনড় থাকলেন রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীরা। যার জেরে মঙ্গলবার থেকে খোলাবাজারে আলুর দাম আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ধর্মঘট জারি রেখেই মঙ্গলবার প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করা হবে।

Advertisement

বাইরের রাজ্যে আলু ‘রফতানি’র ক্ষেত্রে রাজ্যের সীমানায় পুলিশি ‘কড়াকড়ি ও জুলুমবাজি’র প্রতিবাদে সোমবার মধ্যরাত থেকে রাজ্য জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। আশঙ্কা, এর ফলে খোলাবাজারে ফের আলুর আকাল দেখা দিতে পারে। যার জেরে বাড়তে পারে দামও। এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই সোমবার জট কাটাতে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি ও রাজ্যের হিমঘর মালিক সংগঠনকে নিয়ে খাদ্য ভবনে বৈঠক করেন বেচারাম। আলু ব্যবসায়ীরা জানান, বৈঠকে মন্ত্রীর কাছে আলু রফতানিতে কড়াকড়ির বিষয়টি শিথিল করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সে রকম কোনও আশ্বাস দিতে পারেননি মন্ত্রী এবং বৈঠকে উপস্থিত অন্য সরকারি আধিকারিকেরা। সরকারের তরফেও ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছিল বৈঠকে। কিন্তু আলু ব্যবসায়ীরা জানিয়ে দিয়েছেন, সীমানায় আলুর গা়ড়ি আটকানো বন্ধ না-হলে তাঁরাও ধর্মঘটের রাস্তা থেকে সরতে পারবেন না। ফলে মেলেনি কোনও সমাধানসূত্র।

ব্যবসায়ীদের দাবি, রাজ্যের কমবেশি ৫০০টি হিমঘরে এখনও ছয় থেকে সাড়ে ছয় লক্ষ মেট্রিক টন আলু মজুত রয়েছে। ডিসেম্বরে রাজ্যের মোট আলুর চাহিদা তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন। স্বাভাবিক ভাবেই ডিসেম্বরে রাজ্যের চাহিদা মেটানোর পরেও হিমঘরগুলিতে আড়াই থেকে তিন লক্ষ মেট্রিক টন আলু উদ্বৃত্ত থেকে যাবে। সরকার ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত হিমঘর খালি করতে হবে। স্বাভাবিক ভাবে উদ্বৃত্ত ওই আলু ভিন্‌রাজ্যে পাঠানো ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। এর পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই বাজারে ঢুকতে শুরু করবে নতুন আলু। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের বাজারগুলিতে কিছুটা হলেও চাহিদা কমবে সংরক্ষিত আলুর।

রাজ্যের প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মন্ত্রীর সঙ্গে আমরা সোমবার দুপুরে বৈঠকে বসেছিলাম। কিন্তু সেই বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। মন্ত্রী আমাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু আমরা ওই বৈঠকে হাতেগোনা যে ক’জন প্রতিনিধি গিয়েছিলাম, তাঁদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই সোমবার মধ্যরাত থেকে আমাদের ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত জারি থাকছে। মঙ্গলবার হুগলির তারকেশ্বরে ব্যবসায়ী ভবনে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই রাজ্য সরকারের অবস্থান ও আমাদের ধর্মঘট নিয়ে আলোচনা হবে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন