‘মত্ত’ প্রধান শিক্ষককে তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত।
সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান চলছিল বিহারের উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে। পতাকা উত্তোলনের জন্য প্রধানশিক্ষককে ডাকতেই বাধল বিপত্তি! টলতে টলতে মঞ্চে উঠে এলেন তিনি। যে রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ, সেখানে স্কুলের প্রধানশিক্ষকের এই অবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। তারা পুলিশ এবং স্থানীয় আরজেডি বিধায়ককে খবর দেন। গ্রেফতার করা হয় প্রধানশিক্ষক সঞ্জয় কুমারকে। তাঁর দাবি, পাঁচ মাস ধরে বেতন পাননি। স্কুলে মিড ডে মিলের টাকাও পাননি। হতাশ হয়েই মদ খেয়েছেন। এই দাবির পরেই বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে নীতীশ কুমারের সরকার।
বিহারের মুজফ্ফরপুর জেলার মিনাপুরের উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে রবিবার সকালে সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অভিযোগ, ওই অনুষ্ঠানে মত্ত অবস্থায় যোগ দিতে এসেছিলেন স্কুলের প্রধানশিক্ষক। গ্রামবাসীরা তা দেখে হইচই শুরু করেন। স্থানীয় থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে সঞ্জয়কে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর শ্বাসের পরীক্ষা করানো হয়। আরও কিছু মেডিক্যাল পরীক্ষাও হয়। তার পরেই গ্রেফতার করা হয় সঞ্জয়কে।
গ্রেফতার হওয়ার আগে পুলিশকে সঞ্জয় জানিয়েছেন, ‘অসহায়’ হয়ে মদ্যপান করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘পাঁচ মাস ধরে বেতন পাইনি। স্কুলে মিড ডে মিলের বরাদ্দও দেওয়া হয়নি। আমিই জানি, কী ভাবে নিজের সংসার এবং এই স্কুল চালাচ্ছি। ধারে ডুবে রয়েছি।’’ তা হলে মদ্যপানের টাকা পেলেন কী ভাবে? জবাবে সঞ্জয় জানিয়েছেন, বন্ধুদের থেকে টাকা ধার করে মদ্যপান করেছেন। মিনাপুরের পুলিশ আধিকারিক সুজিতকুমার মিশ্র জানিয়েছেন, প্রধানশিক্ষকের মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট এলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।
স্থানীয় আরজেডি বিধায়ক রাজীব কুমারের কটাক্ষ, প্রধানশিক্ষকের অবস্থা থেকে স্পষ্ট যে, বিহারে নিষেধাজ্ঞা কতটা মানা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘এটা লজ্জাজনক যে, প্রধান শিক্ষক মদ্যপান করে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আসছেন।’’ তাঁর দাবি, আসলে বিহারের সর্বত্রই মদ পাওয়া যায়। ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মদ নিষিদ্ধ করেছিলেন নীতীশ কুমার। তার পরে বার বার রাজ্যে বেআইনি ভাবে মদ চোরাচালানের অভিযোগ উঠেছে। বেআইনি ভাবে তৈরি চোলাই খেয়ে প্রাণও হারিয়েছেন অনেকে। এ বার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে বিরোধী আরজেডি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।