Tanmoy Bhattacharya

তন্ময়কে থানায় ডেকে প্রশ্ন, তার পরেই সন্ধ্যায় মহিলা সাংবাদিককে ডেকে পাঠিয়ে বয়ান সংগ্রহ করল পুলিশ

সোমবার দুপুরে বরাহনগর থানায় তলব করা হয়েছিল তন্ময় ভট্টাচার্যকে। প্রায় তিন ঘণ্টা থানায় ছিলেন তিনি। এর পরে সন্ধ্যায় থানায় ডেকে পাঠানো হয় অভিযোগকারী মহিলা সাংবাদিককে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৩১
সোমবার তন্ময় ভট্টাচার্যকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল বরাহনগর থানায়।

সোমবার তন্ময় ভট্টাচার্যকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল বরাহনগর থানায়। —ফাইল চিত্র।

মহিলা সাংবাদিককে হেনস্থায় অভিযুক্ত সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যকে সোমবার দুপুরে তলব করা হয়েছিল বরাহনগর থানায়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। প্রায় ঘণ্টা তিনেক থানায় ছিলেন তিনি। বাড়ি ফিরে বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকও করেন তন্ময়। এরই মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় বরাহনগর থানায় ডেকে পাঠানো হয় ওই মহিলা সাংবাদিককে। সূত্রের খবর, তাঁর বয়ান সংগ্রহ করেছে পুলিশ। রবিবার সকালে নেতার সাক্ষাৎকার নিতে যাওয়ার পর ঠিক কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। রবিবার রাতেই বরাহনগর থানার তন্ময়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই সাংবাদিক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দল থেকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) হওয়া সিপিএম নেতাকে তলব করা হয়েছিল। আগামী বুধবার ফের তাঁকে তলব করা হয়েছে থানায়।

Advertisement

তার আগে অভিযোগকারী মহিলার বয়ান সংগ্রহ করল বরাহনগর থানা। আগামী পরশু তন্ময়কে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের আগে পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাইছে পুলিশের তদন্তকারী দল। মহিলা সাংবাদিকের অভিযোগ, তন্ময় তাঁর কোলে বসে পড়েছিলেন সাক্ষাৎকারের আগে। যদিও সিপিএম নেতার দাবি, ওই মহিলা সাংবাদিক মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। সোমবার বিকেলে থানা থেকে ফিরে তন্ময়ের বক্তব্য, তাঁর ওজন ৮৩ কেজি। তিনি মহিলা সাংবাদিকের কোলে বসে পড়েছেন বলে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা যদি সত্যি হয়, তা হলে কি ওই মহিলা সাংবাদিক সুস্থ থাকতে পারতেন? ওই মহিলা সমাজমাধ্যমে যে অভিযোগ তুলেছেন, তার কিছুই ঘটেনি বলে দাবি তন্ময়ের।

মহিলা সাংবাদিকের কোলে বসে পড়ার অভিযোগটি প্রথম প্রকাশ্যে আসে রবিবার দুপুরে। ওই সাংবাদিক নিজেই সমাজমাধ্যমে লাইভে এসে এই অভিযোগ তোলেন। তার পর সেটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। অস্বস্তিতে পড়তে হয় বাম নেতৃত্বকেও। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ঘোষণা করেন, তন্ময়কে দল থেকে নিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “তন্ময় গর্হিত কাজ করেছে। তা সিপিএম দল হিসাবে কোনও ভাবেই সমর্থন করে না। কেউ এটাকে ভাল চোখে দেখবেন না। আমরা এগুলোকে ক্ষমার চোখে দেখি না।” তন্ময়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দলের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি (আইসিসি) খতিয়ে দেখবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির প্রস্তাবের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে দল।

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই তৃণমূল, বিজেপি উভয় পক্ষই সরব হয়েছে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সরাসরি তন্ময়কে গ্রেফতার করার দাবি তুলেছেন। এই বিষয়ে সিপিএমের অবস্থান কী বলেও খোঁচা দিয়েছিলেন তিনি। সোমবার এই বিষয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। তৃণমূলের শাসনে নিরপেক্ষ তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাই বিরোধীদের নিরপেক্ষ তদন্ত চাওয়া উচিত। অবশ্য সিপিএম বিরোধী দল কি না আমার জানা নেই।”

এই আবহেই সোমবার অভিযোগকারী মহিলা সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “কোনও রাজনৈতিক দল কারও বিচার করতে পারে বলে আমি মনে করি না। তা হলে দেশ জুড়ে সালিশি সভা করেই সব সমস্যার সমাধান করে দেওয়া যেত। আইন-আদালতের প্রয়োজন পড়ত না।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে আশা করি। এটা রাজনীতি করার সময় নয়, সমাজ সংস্কারের সময়।”

আরও পড়ুন
Advertisement