R G Kar Protest

আবার নবান্ন! ছাত্র সমাজ দ্বিতীয় অভিযান করতে চায় পুজোর আগেই, দক্ষিণের সঙ্গে উত্তরবঙ্গেও কর্মসূচি?

গত ২৭ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ডাকে নবান্ন অভিযান ঘিরে বেশ কয়েক জায়গায় গোলমাল হয়। গ্রেফতার নেতারা মুক্তি পাওয়ার পরে আবার নতুন কর্মসূচির ভাবনাও শুরু করেছে তারা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:০৩
Paschimbanga Chatra Samaj is planning for another programme on RG Kar issue

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অগস্টে নবান্ন অভিযান করার পরে সেপ্টেম্বরেও নিজেদের উপস্থিতি জানাতে চায় সমাজমাধ্যম থেকে উঠে আসা সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। গত ২৭ অগস্ট তারা নবান্ন অভিযানের ডাক দিলে সংঘর্ষের আবহ তৈরি হয় কলকাতা ও হাওড়ায়। সংগঠনের কয়েক জন নেতাকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। ইতিমধ্যেই তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। আর তার পরেই নতুন করে আন্দোলনের পরিকল্পনা তৈরি করছেন তাঁরা। তবে কেমন কর্মসূচি হবে তা নিয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ তাঁরা। আবার কি নবান্ন অভিযান হবে? ছাত্র সমাজের প্রতিনিধি শুভঙ্কর হালদার বলেন, ‘‘এখনই আমরা কী কর্মসূচি, তা বলছি না। কারণ, কোনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। তবে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন চলবে। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের যে দাবি আমার তুলেছি তা নিয়ে আরও বড় আকারে কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে।’’ খুব তাড়াতাড়ি কর্মসূচির ঘোষণা হয়ে যাবে বলেও দাবি শুভঙ্করের। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই দুর্গাপুজো। তবে তার অনেক আগেই দ্বিতীয় অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে ছাত্র সমাজের।

Advertisement

নবান্ন অভিযান সফল হয়েছে বলেই মনে করে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। তাদের ডাকে নবান্ন অভিযান ঘিরে সংঘর্ষের আবহ তৈরি হয় কলকাতা ও হাওড়ায়। কলেজ স্কোয়্যার এবং সাঁতরাগাছি থেকে দু’টি মিছিল বার হয়ে নবান্নের দিকে যাবে জানালেও সে দিন বেশ কয়েকটি ছোট ছোট মিছিল হয়। তা আটকাতে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নিয়েছিল পুলিশ। কাঁদানে গ্যাস, জলকামানের পাশাপাশি লাঠিও চালায় পুলিশ। পাল্টা ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে মিছিল থেকে। কয়েক জন পুলিশকর্মী আহতও হন। পুলিশ কর্মসূচির আগে থেকেই অভিযান আহ্বায়কদের কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। পরে সায়ন লাহিড়ী নামে এক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কলকাতা হাই কোর্ট সায়নকে জামিন দিলেও বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। সেখানেও সায়নের পক্ষেই রায় মেলে। সেই জয়কে পাথেয় করেই আবার কর্মসূচি নিতে চান শুভঙ্করেরা। তিনি বলেন, ‘‘সে দিন সাধারণ মানুষ আমাদের ডাকে যে ভাবে সাড়া দিয়েছেন তা এখনও পাচ্ছি। আদালতও জানিয়ে দিয়েছে, আমরা কোনও অন্যায় করিনি। তাই আরও বড় আকারে নির্যাতিতার বিচার এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি নিয়ে আমরা পথে নামব।’’

নবান্ন অভিযানে পুলিশি দমনপীড়নের অভিযোগ তুলে পরের দিন বাংলা বন্‌ধ ডাকে বিজেপি। নবান্ন অভিযানে আড়াল থেকে বিজেপির সমর্থন রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। নবান্ন অভিযানে গোলমাল চলার সময়েই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার লালবাজারের উদ্দেশে বিজেপি নেতা ও কর্মীদের নিয়ে মিছিল করেন। সায়ন মুক্তি পাওয়ার পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ধন্যবাদ জানান। কারণ, আদালতের লড়াইয়ে সরাসরি বিজেপি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এ বারেও কি বিজেপির সমর্থন নিয়েই কর্মসূচি হবে? শুভঙ্কর বলেন, ‘‘এটা তো লোকের কথা। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল যদি শাসকের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজের আন্দোলনের পাশে দাঁড়ায় তবে সমস্যা কোথায়? তবে আমার কোনও সাহায্য চাইনি এবং আগামী দিনেও চাইব না।’’ শুভঙ্করের দাবি, সমাজমাধ্যমে তাঁরা যে সাড়া পেয়েছেন তাতে এখন ছাত্র সমাজের শক্তি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘গত বুধবার রাতে সাধারণ মানুষের আন্দোলনের সময়ে কোচবিহারের মাথাভাঙায় অত্যাচার করা হয়েছে। আমরা সেখানে আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করতে যাব।’’ তিনি এমনটাও দাবি করেছেন যে, নবান্ন অভিযানে মূলত দক্ষিণবঙ্গের মানুষ যোগ দিয়েছেন। এ বার উত্তরবঙ্গ থেকেও মানুষ আসবেন। তিনি বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আমরা এমন কর্মসূচি নেব, যাতে গোটা রাজ্যের মানুষ অংশ নিতে পারেন। আর সেটা পুজোর আগেই হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement