CPIM

ধর্ম নয়, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই, বাংলাদেশ টেনে বার্তা সূর্য-সেলিমের

দলের দুই শীর্ষ নেতা মহম্মদ সেলিম ও সূর্যকান্ত মিশ্র স্মরণ করিয়ে দিলেন, সিপিএম হিন্দু বা মুসলিম-বিরোধী কোনওটাই নয়। ধর্মের সঙ্গে তাদের কোনও বিরোধও নেই।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:২৭
সিপিএমের মুখপত্রের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে সূর্যকান্ত মিশ্র ও মহম্মদ সেলিম। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে।

সিপিএমের মুখপত্রের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে সূর্যকান্ত মিশ্র ও মহম্মদ সেলিম। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে। —নিজস্ব চিত্র।

বাংলাদেশের পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে দলের অবস্থান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে সিপিএমের জেলা সম্মেলনে। বিজেপির নানা মাপের নেতারা এ রাজ্যে সিপিএমকে ‘হিন্দু-বিরোধী’ তকমা দিয়ে সরব হয়েছেন। এমতাবস্থায় দলের দুই শীর্ষ নেতা মহম্মদ সেলিম ও সূর্যকান্ত মিশ্র স্মরণ করিয়ে দিলেন, সিপিএম হিন্দু বা মুসলিম-বিরোধী কোনওটাই নয়। ধর্মের সঙ্গে তাদের কোনও বিরোধও নেই। লড়াই ধর্মকে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে। এবং সেই লড়াই অবশ্যই জারি থাকবে।

Advertisement

সিপিএমের দৈনিক মুখপত্রের ৫৯তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনের মঞ্চকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বার্তা দেওয়ার জন্য বেছে নিয়েছিলেন দলের নেতৃত্ব। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে শুক্রবারের সভায় সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত ব্যাখ্যা করেছেন, বিশ্ব জুড়ে দক্ষিণপন্থার দাপটের সঙ্গে সঙ্গে ধর্ম, জাত বা ভাষার নামে বিভাজনের চেষ্টাও বাড়ছে। সেই প্রয়াসের বিপরীতে বিকল্প ভাষ্যকে জোরদার করে মেহনতি মানুষকে একজোট করতে হবে। সূর্যকান্তের কথায়, ‘‘কমিউনিস্টদের কাজ সব অংশের মেহনতি মানুষকে একজোট করা। তারা আন্তর্জাতিকতায় বিশ্বাসী, এর সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক বা বিরোধ নেই। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ধর্ম এবং সাম্প্রদায়িকতা এক নয়। সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে বিভাজনের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে।’’

প্রতিবেশী বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনেই এই প্রশ্নে সরব হয়েছেন সিপিএমের আর এক পলিটব্যুরো সদস্য ও দলের রাজ্য সম্পাদক সেলিমও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মৌলবাদী শক্তি এখন বাংলাদেশকে শেষ করছে। আর এখানে সেটা দেখিয়ে ভারতের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে। ইসলামি বাংলাদেশ হলে ভারতকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ করার কথা বলতে সুবিধা হবে। আমাদের এখানে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে, আর ও’পারে ভারত-বিদ্বেষ।’’ তাঁর অভিযোগ, সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা দিতে না-পেরে কেন্দ্র এবং রাজ্যের দুই সরকারই সীমান্ত নিয়ে তরজায় মেতে আছে। এই সূত্রেই সেলিমের আহ্বান, আর জি কর-কাণ্ডে ন্যায়-বিচার হোক বা যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি— ন্যায্য দাবি আদায়ের লড়াই চালাতে হবে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন প্রবীণ নেতা বিমান বসু, বক্তা ছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও দৈনিক মুখপত্রের সম্পাদক শমীক লাহিড়ীও। দলের শাস্তিপ্রাপ্ত নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যকেও এ দিন দেখা গিয়েছে অনুষ্ঠানে।

Advertisement
আরও পড়ুন