ক্যালিবার টি-৫। ছবি: এক্স হ্যান্ডল থেকে নেওয়া।
পোশাকি নাম, ‘রিমোটলি অপারেটেড এক্সপ্লোসিভ ডিসপোজ়াল রোবট’। আদতে দূর নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরক সন্ধান ও বিনষ্টকারী যান। দেশের এলিট কমান্ডো বাহিনী ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড’ (এনএসজি)-এর সৌজন্যে এ বার তার অত্যাধুনিক সংস্করণ ‘ক্যালিবার টি-৫’ দর্শন করল সন্দেশখালি।
ব্যাটারিচালিত এবং দূর থেকে নিয়ন্ত্রণযোগ্য এই রোবট নিরাপদ ভাবে বোমা ও বিস্ফোরক চিহ্নিত করার কাজে ব্যবহার করে এনএসজি, ভারতীয় সেনা এবং বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বাহিনী। জওয়ানদের প্রাণহানির ঝুঁকি এড়িয়ে বোমা বা বিস্ফোরক খুঁজে বার করা, সরানো এবং নষ্ট করার কাজে ব্যবহার করা হয় এই রোবট। সাধারণ বিস্ফোরকের পাশাপাশি, রাসায়নিক, এমনকি পরমাণু বোমাও চিহ্নিত ও বহন করতে পারে এই রোবট।
উঁচু-নিচু, অসমতল জমির উপর যাতায়াতের সুবিধার জন্য ট্যাঙ্কের মতোই এই রোবটের ছ’টি চাকাকে মুড়ে রয়েছে ‘ক্যাটারপিলার ট্র্যাক্ট’। ফলে সিঁড়ি ও খাড়া ঢাল দিয়ে ওঠানামাও করতে পারে সহজেই। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ‘পোর্টেবল এক্সরে ডিভাইস’-এর সাহায্যে স্ক্যান করে দ্রুত লুকোনো বোমা বা বিস্ফোরক চিহ্নিত করতে পারে ক্যালিবার। তার পর ‘গ্রিপার-আর্ম’-এর সাহায্যে সেই বোমা বা আইইডি তুলে এনে তা জল দিয়ে বা অন্য পদ্ধতিতে নিষ্ক্রিয় করতে পারে।
এই রোবটে একটি শটগানও রয়েছে। যা দিয়ে বন্ধ দরজা ভাঙা যায়। প্রায় ৫০০ মিটার দূরে ‘মাস্টার কন্ট্রোল স্টেশনে’ বসেই ক্যালিবারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা যায়। চারটি ক্যামেরা ও এক্সরে-সহ এই রোবট যান জার্মানি-সহ বিভিন্ন দেশের উন্নত সশস্ত্র বাহিনীর ‘সোয়াট’ (স্পেশাল ওয়েপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্স) ইউনিটগুলির মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। ‘ভারতীয় প্রতিরক্ষা ও গবেষণা সংস্থা’ (ডিআরডিও) সম্প্রতি তৈরি করেছে ক্যালিবারের ভারতীয় সংস্করণ। নাম দেওয়া হয়েছে ‘দক্ষ’।
দু’টি ব্যাটারি-সহ ৬৮ কিলোগ্রাম ওজনের এই রোবট-যান টানা চার ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারে। সন্দেশখালিতেও শুক্রবার দীর্ঘ ক্ষণের জন্য অভিযান চালিয়ে বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে এনএসজির রোবট। প্রায় তিন ইঞ্চির ‘গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স’ যুক্ত ক্যালিবার মরুভূমির বালি বা গুঁড়ো বরফের আস্তরণের উপর দিয়ে চলাচল করতে পারে সাবলীল ভাবে। এর ‘গ্রিপার-আর্ম’ ৩৬০ ডিগ্রিতে থাকা বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে পারে।