JP Nadda

‘তফসিলি, অনগ্রসরদের প্রাপ্য মুসলিমদের দিয়ে দেবে কংগ্রেস’! বললেন বিজেপি সভাপতি নড্ডা

শুক্রবার মুম্বইয়ে নড্ডা বলেন, ‘‘কংগ্রেস এবং তাদের ‘ইন্ডি’ (‘ইন্ডিয়া) জোটের গোপন উদ্দেশ্য হল এসসি-এসটি এবং ওবিসিদের অধিকার কেড়ে নিয়ে তা মুসলিমদের দিয়ে দেওয়া।’’

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৪৬

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পরে এ বার ভোটের প্রচারে ‘মুসলিম’ শব্দ ব্যবহার করে মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ উঠল বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার বিরুদ্ধে। যে অভিযোগে বৃহস্পতিবারই মোদীর জবাবদিহি চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

শুক্রবার মুম্বইয়ে নড্ডা বলেন, ‘‘কংগ্রেস এবং তাদের ‘ইন্ডি’ (‘ইন্ডিয়া) জোটের গোপন উদ্দেশ্য হল তফসিলি জাতি-জনজাতি (এসসি-এসটি) এবং অন্যান্য অনগ্রসরদের (ওবিসি) অধিকার কেড়ে নিয়ে তা মুসলিমদের দিয়ে দেওয়া। ওঁদের প্রধানমন্ত্রী মনমোহনই তো বলেছিলেন, ‘দেশের সম্পদের উপর প্রথম অধিকার মুসলিমদের’। আমাদের প্রধানমন্ত্রী মোদীজি কিন্তু দেশের সম্পদের উপর গরিবদের অগ্রাধিকারের কথা বলেন।’’

লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহারের ছত্রে ছত্রে এসসি-এসটি-ওবিসিদের প্রতি ‘ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ’ ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। প্রসঙ্গত, প্রথম দফার ভোটের আগে মোদী-সহ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সরকারের কাজ এবং উন্নয়নের কথা বললেও দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের আগে থেকেই হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের কথা বলে মেরুকরণের পুরনো ‘অস্ত্র’ ব্যবহার শুরু করেছেন বলে অভিযোগ।

গত রবিবার মোদী রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় বিজেপির সভায় বলেন, ‘‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ অতীতে বলেছিলেন, দেশের সম্পদে সর্বাগ্রে অধিকার মুসলিমদের। সেই কারণেই সমীক্ষা করার পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস। যাতে দেশবাসীর কষ্টার্জিত অর্থ মুসলিম ও অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া যায়।’’ এর পরে সোমবার উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের নজর আপনার সম্পত্তির উপরে রয়েছে। ক্ষমতায় এলে এরা মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্র ছিনিয়ে নেবে। কাদের বিলিয়ে দেবে, তা আপনারা জানেন।’’ যদিও মনমোহন প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বলেছিলেন, ‘‘দেশের সম্পদে অগ্রাধিকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীগুলির।’’

মঙ্গলবার টঙ্ক-সওয়াই মাধোপুরে বিজেপির সমাবেশে মোদী বলেছিলেন, ‘‘কংগ্রেস শাসনে হনুমান চালিশা শোনাও অপরাধ। হনুমান জয়ন্তীতে আমার কিছু দিন আগেকার একটি কথা মনে পড়ছে। কংগ্রেস শাসিত কর্নাটকে এক ব্যবসায়ী তাঁর দোকানে বসে হনুমান চালিশা শুনছিলেন। আর সেই অপরাধে তাঁকে মেরে রক্তাক্ত করে দেওয়া হয়েছিল।’’ রাজস্থানের পূর্বতন কংগ্রেস শাসিত সরকার রামনবমীতে শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছিল বলেও অভিযোগ করেন মোদী।

ওই সভাতেই দলিত, জনজাতি এবং অনগ্রসর ভাবাবেগ উস্কে দিতে মোদী বলেছিলেন, ‘‘যখন কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ার দলগুলি ক্ষমতায় ছিল তখন দলিত এবং সমাজে পিছিয়ে থাকা শ্রেণির সংরক্ষণ কমিয়ে, মুসলিমদের দিতে চেয়েছিল। ভোট ব্যাঙ্কের জন্য তারা সংবিধানের বিরুদ্ধে গিয়ে মুসলিমদের আলাদা সংরক্ষণ দিতে চেষ্টা করেছিল। বাবাসাহেব অম্বেডকর দলিত সমাজের পিছিয়ে থাকা অংশ এবং জনজাতির সংরক্ষণের অধিকার দিয়েছিলেন। কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া মুসলিমদের তা দিতে চায়।’’

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের বক্তৃতাতেও এসেছে মুসলিম প্রসঙ্গ। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে নিশানা করে তিনি বলেছেন, ‘‘আপনারা দেশে সংবিধানের পরিবর্তে শরিয়তের শাসন চালু করতে চান কি না, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিন।’’ সম্প্রতি বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, মোদীর জমানায় দেশে ধনী-গরিবের অসাম্য বেড়েছে। দেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় কয়েক জনের হাতে কুক্ষিগত হয়েছে। কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, আমজনতার মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে বুঝতে পেরেই মোদী এবং তাঁর দলের নেতারা মেরুকরণের পথ নিয়েছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement