পাঁচ ডাকাতের পাঁচ মিনিট: সিসিটিভিতে দেখা গেল মালদহে গয়নার দোকানে ডাকাতির ছবি। —নিজস্ব চিত্র।
ভরা বাজার। বড়দিনে ভিড় অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশিই ছিল। সেই ভিড়ের মাঝেই তাঁরা এলেন। দোকানে ঢুকলেন। এবং গয়নার দোকান লুট করে পালালেন। সবার চোখের সামনেই। পাঁচ মিনিট তিন সেকেন্ড ধরে সেই ডাকাতি নিজেদের চোখের সামনে দেখল একদল জনতা। কিন্তু ভয়ে কেউ বাধাই দিতে পারলেন না। এক জন আওয়াজ করতেই চলল গুলি। তার পর নাইলনের বাজার ব্যাগে গাদাগাদি করে গয়না ভরে চম্পট দিল ডারকাতদল। সোমবার সন্ধ্যায় মালদহের চাঁচলে একটি গয়নার দোকানে ডাকাতির পর সিসিটিভিতে দেখা গেল সেই রুদ্ধশ্বাস ৫ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ‘অপারেশন’। যা দেখে কার্যত থ হয়ে যেতে হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গয়নার দোকানের সামনে দুটি বাইক এসে দাঁড়ায়। প্রত্যেকের মাথায় হয় হেলমেট নয়তো হনুমান টুপি ছিল। তাঁরা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে চাঁচলের বিখ্যাত একটি গয়নার দোকানে হুড়মুড়িয়ে ঢোকেন। সিসিটিভিতে দেখা যাচ্ছে, সময় তখন সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৪৭মিনিট। শুরু হয় ‘অপারেশন’। দেখা যায়, পাঁচ ডাকাত হম্বিতম্বি করে লুট করছেন। তাঁরা ক্যাশমেমো ছুড়ে ফেলছেন। কখনও গয়নার বাক্স, কখনও হাতে থাকা বন্দুকের বাঁট দিয়ে দোকানের কর্মচারীদের মারধর করছেন। কেউ সামান্য বাধা দিলেই চলছে মার। তার মধ্যে এক ডাকাতকে দেখা যায় গয়নার শোকেসে হামাগুড়ি দিয়ে উঠে গেলেন। বেয়ে বেয়ে উপর থেকে একের পর এক গয়নার বাক্স পেড়ে আনলেন তিনি। আর এক জন সেগুলো ঝটপট বাজারের ব্যাগে ঢোকাতে শুরু করলেন। এই ভাবে মাত্র পাচ মিনিট তিন সেকেন্ডে লুটপাট হয়ে গেল গোটা দোকান। তার পর বন্দুক উঁচিয়ে বেরিয়ে গেল ডাকাতদল। ইতিমধ্যে সিসিটিভি দেখে ডাকাতদলকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তবে তাঁদের মুখ হেলমেট আর হনুমান টুপিতে ঢাকা থাকায় অসুবিধায় পড়েছেন তদন্তকারীরা। লুটের পর কোন রাস্তা দিয়ে বাইক ছুটিয়েছেন পাঁচ ডাকাত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্য দিকে, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন ব্যবসায়ীরা।
বস্তুত, থানার অদূরে সবার চোখের সামনেই এই ডাকাতি হয়েছে। এক রাউন্ড গুলি চলে। তাতে হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে এমন ডাকাতির ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে। নিজের চোখের সামনে ডাকাতি হতে দেখেও কিছুই করতে পারেননি স্থানীয় ব্যবসায়ী লাল্টু মুখোপাধ্যায়। এক বার তিনি বাধা দিতে যেতেই ডাকাতরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালান বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে নানা জায়গায় ডাকাতদলের খোঁজ শুরু হয়েছে। তবে এখনও তাদের কোনও সন্ধান মেলেনি।