তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিক বরাইক। ছবি: সংগৃহীত।
তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ প্রকাশ চিক বরাইকের আলিপুরদুয়ারের ভাড়াবাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল। বুধবার রাতে কয়েক জন একটি বোলেরো গাড়ি ও একটি বাইকে করে এসে বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। প্রকাশের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, সাংসদ সেই সময় কালচিনি ব্লকের তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে নিজের বাড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর বৈঠক করছিলেন।
শাসক তৃণমূল সূত্রে খবর, রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কয়েক জন এসে প্রকাশের ভাড়াবাড়ির দরজায় ধাক্কা দেন। গালিগালাজও করেন। তা শুনে সাংসদের দেহরক্ষী দরজা খুললে তাঁকে ধাক্কা দেওয়া হয়। এর পরেই প্রকাশ ও বৈঠকে থাকা দলীয় নেতারা বেরিয়ে এসে তিন জনকে ধরে ফেলেন। পরে তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রকাশ জানান, কী কারণে অজ্ঞাতপরিচয় ওই কয়েক জন তাঁর বাড়িতে এসেছে গন্ডগোল করেছেন, তা তিনি জানেন না। তবে একটু জানেন যে, তাঁরা আলিপুরদুয়ারেরই বীরপাড়ার বাসিন্দা।
সাংসদ বলেন, ‘‘ওরা কারা আমি জানি না। কেন রাতে মদ খেয়ে আমার বাড়িতে এসে হুজ্জুতি করল, তা-ও জানি না। বিরোধীদের চক্রান্ত হতে পারে। ছ’জন এসেছিল। তিন জন উপরে এসে ঝামেলা করছিল। তিন জন নীচে ছিল। ছ’জনকেই পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। তাদের আজ কোর্টে হাজির করিয়েছিল পুলিশ। বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।’’
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে কুমারগ্রামের নিউল্যান্ডস চা বাগানে করণিক হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন প্রকাশ। তার পরেই সক্রিয় ভাবে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়। তবে তৃণমূলে প্রকাশের রাজনৈতিক উত্থান হয় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে। চা বলয়ের আদিবাসী নেতা বলে পরিচিত প্রকাশকে ওই বছর দলের জেলা সভাপতি করে তৃণমূল। এ বছর তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদও করেছে রাজ্যের শাসক দল। সাম্প্রতিক কালে রাজ্য রাজনীতিতে চা বলয়কে অনেকটা গুরুত্ব দিয়ে আসছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, সেই কারণেই প্রকাশকে গুরুত্ব বেড়েছে দলে। শাসকদলের অন্য একটি অংশের মতে, আদিবাসীদের মধ্যে বিজেপির ‘প্রভাব’ খর্ব করতে প্রকাশকে সাংসদ করে আদিবাসী সমাজকে ‘বার্তা’ দিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ঘটনাচক্রে তৃণমূল যশোবন্ত সিন্হাকে সমর্থন করেছিল। বিজেপি তার পরে দ্রৌপদীর নাম ঘোষণা করে। কিন্তু তখন আর তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে দেশের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতির নাম সমর্থন করার উপায় ছিল না। সেই সূত্রে বিজেপি বার বার তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে। অনেকে মনে করছেন, সেই ‘রাজনৈতিক’ কারণেই প্রকাশকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে তৃণমূল।