শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ির সেবদোল্লা জোতের কানু সান্যালের বাড়ি এবং সেখানকার লালপুল এলাকার ছবি। ছবিঃ স্বরূপ সরকার।
নকশাল নেতা কানু সান্যালের গ্রাম তথা বিজেপি সাংসদের দত্তক নেওয়া গ্রামকে ‘মডেল’ করায় উদ্যোগী তৃণমূল-পরিচালিত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ। শিলিগুড়ি শহর থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার দূরে, নকশালবাড়ি ব্লকের হাতিঘিসা পঞ্চায়েতের গ্রামটির নাম সেবদৌল্লাজোত। ২০১৪ সালে আদর্শ গ্রাম যোজনার আওতায় হাতিঘিসাকে দত্তক নেওয়ার ঘোষণা করেন দার্জিলিঙের তৎকালীন বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া। উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের আশা দেখেছিল হাতিঘিসা। যদিও অভিযোগ, কোনও কাজ হয়নি। এ বার সেই গ্রামকেই ‘মডেল’ করে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার কাজ শুরু হয়েছে বলে দাবি পরিষদের।
এই গ্রামেই থাকতেন প্রয়াত নকশাল নেতা কানু সান্যাল। সেখানে একটি গ্রন্থাগার তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন সভাধিপতি অরুণ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সেবদৌল্লার জন্য আপাতত এক কোটি টাকা বরাদ্দের চিন্তাভাবনা হয়েছে। রাজনীতি ভুলে উন্নয়নের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ।’’
লোকসভা ভোটের আগে, বিজেপির ‘ব্যর্থতা’ সামনে আনতেই কি হাতিঘিসাকে ভাসিয়ে তোলা? উঠছে এ প্রশ্ন। মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণের দাবি, বিজেপি সাংসদ অহলুওয়ালিয়া বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ করলেও, স্থানীয় প্রশাসনের ‘অসহযোগিতায়’ মাঝপথে টাকা আটকে যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মহকুমার সব গ্রামই বেহাল। হঠাৎ সেবদৌল্লাকে নিয়ে উদ্যোগ কেন? আসলে রাজনীতি করতে চাইছে তৃণমূল।’’ সিপিআইএমএল (ফাউন্ডার জেনারেল সেক্রেটারি কানু সান্যাল অর্গানাইজেশন) রাজ্য সম্পাদক দীপু হালদার বলেন, ‘‘গ্রামের উন্নয়ন যে কেউ করতে পারেন। কিন্তু রাজনীতির উদ্দেশ্যেই ‘মডেল’ গ্রামের চিন্তাভাবনা কি না, আগামিদিনে বোঝা যাবে।’’
সূত্রের খবর, সেবদৌল্লায় ২.৩১ কোটি টাকায় পেভার ব্লকের রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে। পানীয় জলের রিজার্ভার বসানোর কাজ চলছে। চা বাগানে ঘেরা গ্রামটির লালাপুল এলাকায় পর্যটকদের ভিড় হয়। সেখানে পার্ক, দোকান, থাকার ব্যবস্থার ভাবনা-চিন্তাও চলছে বলে দাবি।