কেন্দ্রীয় সরকারের বঞনার বিরুদ্ধে অবস্থান বিক্ষোভ তৃনমূল কংগ্রেসের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের বাড়ির ১০০মিটার দুরত্বে। ছবিঃ বিনোদ দাস।
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে জলপাইগুড়িতে বিজেপির জেলা সভাপতির বাড়ির ঢিল ছোড়া দূরত্বে অবস্থান বিক্ষোভে বসল তৃণমূলে। রবিবার একই ভাবে শিলিগুড়িতেও অবস্থান বিক্ষোভ করল তৃণমূল।
কলকাতায় একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে বিজেপির বিধায়ক, সাংসদদের বাড়ির সামনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আদালত সেই কর্মসূচি বাতিল করে। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় প্রত্যেক ব্লকে অবস্থান বিক্ষোভ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিন শিলিগুড়িতে কার্যত বিজেপির বিধায়ক, সাংসদের বাড়ির পাশেই অস্থায়ী মঞ্চ পেতে বিক্ষোভ কর্মসূচি করতে দেখা গিয়েছে। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জলপাইগুড়িতে এ দিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানালেন, আদালতের নির্দেশের উপেক্ষা করে তৃণমুলের রাজনৈতিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে আবার আদালতের দ্বারস্থ হতে চলছেন তিনি।
একশো দিনের কাজের টাকা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বরাদ্দ নিয়ে বঞ্চনার প্রতিবাদে এ দিন শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের অবস্থান বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে জলপাইগুড়ির মোহিতনগরে বিজেপি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর বাড়ির সামনে অবস্থান বিক্ষোভ ছিল অন্যতম। সেখানে বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত চলল অবস্থান বিক্ষোভ। ছিলেন বিধায়ক প্রদীপকুমার বর্মণ, জেলায় দেলের এসসি-এসটি সেলের সভাপতি কৃষ্ণ দাস। কৃষ্ণ বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরের সুবিধে থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সকলে। এই অভিযোগ তুলে ধরে অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। তবে বিজেপি জেলা সভাপতির বাড়ি ঘেরাও করে কর্মসূচি করা হচ্ছে না। বাড়ি থেকে অনেক দূরে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে চলছে অবস্থান। বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কেউ নেই। এই কারণে শাসক দলের বদনাম করা হচ্ছে।" এ দিনই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন,"জেলা সভাপতির কাছ থেকে অবস্থানের ভিডিয়ো ফুটেজ চেয়ে নেব। সব দেখে ফের আদালতের দ্বারস্থ হব। আদালতের নির্দেশ ছিল বিজেপি নেতা কর্মীদের বাড়ির সামনে অবস্থান করা যাবে না। নির্দেশ মানা হয়নি। এই কারণে অবশ্যই বিচারপতির নজরে আনা হবে।’’
শিলিগুড়ির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তরুণতীর্থ ক্লাবের পাশেই মঞ্চ করেছিল তৃণমূল। পাশেই বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের বাড়ি। বিধায়কের বাড়ির কাছেই সেদিকে মুখ করে মাইক বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে শিলিগুড়ি মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘কোনও না কোনও জায়গায় তো কর্মসূচি করতে হবে। বিধায়কের বিড়ির সামনে গিয়ে করা হয়নি। আমরা আদালতকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েই আমাদের কর্মসূচি করছি।’’ মেয়রের দাবি, একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার প্রকল্প থেকে জিএসটিতে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকে রেখে অর্থনৈতিক অবরোধ করছে কেন্দ্র। মণিপুরে নারী নির্যাতন এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। দেশের সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করা হচ্ছে। তার প্রতিবাদে আন্দোলন চলবে।
মাটিগাড়া খাপরাইল মোড়ের পাশেই সাংসদ রাজু বিস্তার বাড়ির সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি হয়েছে। সেখানে মাটিগাড়া ব্লক তৃণমূল নেতা খগেশ্বর রায় ছিলেন। দার্জিলিং জেলা (সমতল) তৃণমূলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, ‘‘এদিনের কর্মসূচির সঙ্গে বাড়ি ঘেরাওয়ের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
পাল্টা মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ বলেন, ‘‘যিনি কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন তিনি দেশছাড়া। এই নেতাদের রাজ্যের মানুষ বাংলা ছাড়া করবেন।"