মাথাভাঙায় প্রতিবাদীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার রাজ্য জুড়ে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আলো নিভিয়ে মোমবাতি জ্বেলে প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আরও এক বার 'রাতদখল'এর ডাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই প্রতিবাদেও হামলার অভিযোগ। কাঠগড়ায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। বুধবার কোচবিহারের মাথাভাঙায় প্রতিবাদীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
মাথাভাঙা শহরের চৌপতিতে বুধবার গণতান্ত্রিক লেখক সংগঠন এবং ভারতীয় গণনাট্য সংঘের উদ্যোগে প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। বহু সাধারণ মানুষ তাতে শামিল হয়েছিলেন। রাস্তা জুড়ে প্রতিবাদের প্রতীকী ছবি এঁকেছিলেন শিল্পীরা। অভিযোগ, কর্মসূচি চলাকালীন আচমকা ঘটনাস্থলে হাজির হন স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাঁরা প্রতিবাদীদের মারধর করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেন। তাঁদের সঙ্গে প্রতিবাদীদের কথা কাটাকাটিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
অভিযোগ, রাস্তায় আঁকা প্রতিবাদের ছবি জল ঢেলে মুছে দেন তৃণমূল কর্মীরা। এ প্রসঙ্গে আয়োজকদের এক জন বলেন, "গণসংগঠনের তরফে আমরা আরজি করের প্রতিবাদে কর্মসূচির আয়োজন করেছিলাম। গান-বাজনা-আবৃত্তির মাধ্যমে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ। বহু বিশিষ্ট নাগরিক প্রতিবাদে যোগ দিয়েছিলেন। মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ চলছিল। কোনও রাজনৈতিক ঝান্ডা ছিল না। এর মধ্যে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূলের নেতৃত্বে আমাদের কিছু সদস্যের উপর হামলা হয়। যা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। বিচার চেয়ে রাস্তায় ছবি এঁকেছিলেন শিল্পীরা। তা মুছে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে ধিক্কার জানাচ্ছি।”
তৃণমূলের বক্তব্য, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। মাথাভাঙার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বিশ্বজিৎ রায় বলেন, "আরজি করে যা ঘটেছে, তা নিয়ে আমরাও মিছিল করেছি। আমরাও দোষীদের শাস্তি চাইছি। সরকার সহযোগিতা করছে। ২০ দিন হয়ে গিয়েছে। সিপিএম এবং কিছু বুদ্ধিজীবী এটা নিয়ে রাজনীতি করছে। ওরা শাস্তি চায় না। পদত্যাগ চায়। ক্ষমতাদখলের এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমরা সরব হয়েছি।" রাস্তায় আঁকা ছবি মুছে দেওয়ার অভিযোগ তিনি স্বীকার করেননি।
উল্লেখ্য, গত ১৪ অগস্ট আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে একই ভাবে রাতদখল কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। সে দিন আরজি কর হাসপাতালে কর্মসূচি চলাকালীন আচমকা এক দল দুষ্কৃতী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় হাসপাতালে। অনেকে বুধবারের কোচবিহারের ঘটনার সঙ্গে তার মিল পাচ্ছেন।
তৃণমূল মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “মাথাভাঙার ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত আছে কি না সেই বিষয়ে জানা নেই। শুনেছি একটা গণ্ডগোল হয়েছে। কারা এর পিছনে জড়িত আমরা খোঁজ নিচ্ছি। দল এ সব বিষয়কে কখনই অনুমোদন করে না।”