সঙ্ঘমিত্রার (বাঁ দিকে) সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী বিশ্বরূপা। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে উত্তর দিনাজপুরের ঘটনার প্রতিবাদ দেখল বাঁকুড়ার ছাতনা।
ছাতনার ঝাঁটিপাহাড়িতে শুক্রবার দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে বক্তব্য রাখছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। হঠাৎ সভাস্থলের সামনের ভিড় থেকে শিশু কোলে দাঁড়িয়ে এক বধূ চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘‘উত্তর দিনাজপুরে এক নাবালিকাকেকে ‘গণধর্ষণ’ করে খুন করা হল, যাঁরা মৃত্যুঞ্জয় বর্মণকে বাড়িতে ঢুকে হত্যা করল, তাদের বিচার চাই।’’
ঘটনার প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে মঞ্চ থেকেই সায়ন্তিকা বলেন, ‘‘আমরা বিচারক নই। আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াই। আইন আইনের পথে চলবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবেন না। মানুষ বিচার পাবেই।’’ সায়ন্তিকার জবাবে সঙ্ঘমিত্রা অধিকারী নামে ওই বধূ সন্তুষ্ট না হওয়ায় এলাকার জেলা পরিষদ আসনের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বরূপা সেনগুপ্ত তাঁর কাছে গিয়ে কথা বলেন। তাঁকে সঙ্ঘমিত্রা বলেন, ‘‘আমার দাবির কথা যাতে দিদির (মুখ্যমন্ত্রী) কাছে পৌঁছয়, সে জন্যই আমি এখানে বিষয়টা তুললাম।’’
মাস দু’য়েক আগে উত্তর দিনাজপুরে ওই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে কালিয়াগঞ্জ থানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশকর্মীদের মারধরের ঘটনাও ঘটে। ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাদগাঁওয়ে বিজেপির স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিষ্ণু বর্মণকে গ্রেফতার করতে গিয়ে পুলিশ তাঁর খুড়তুতো ভাই মৃত্যুঞ্জয় বর্মণকে গুলি করে খুন করে বলে অভিযোগ। ছাতনার ঘটনা জেনে বিষ্ণু বলছেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে রাজবংশীরা অত্যাচারিত। ওই বধূ সঠিক প্রতিবাদই করেছেন।’’ ওই নাবালিকার কাকারও বক্তব্য, ‘‘রাজ্য জুড়ে রাজবংশীরা অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে শুরু করেছেন।’’
কেন এই প্রতিবাদ? সঙ্ঘমিত্রার জবাব, ‘‘আমি কোচবিহারের রাজবংশী পরিবারের মেয়ে। কালিয়াগঞ্জের ঘটনার পরে রাজ্য সরকারের উপরে আমরা আস্থা হারিয়েছি। তবে যাতে আমাদের হারানো আস্থা মুখ্যমন্ত্রীর উপরে ফিরে আসে, তাই গলা ফাটিয়েছি।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয় পদক্ষেপ করবেন।’’