চলছে তল্লাশি। —ফাইল চিত্র।
মহাসড়কের কাজ শেষ হবে কবে তা নিয়ে নিশ্চিত নন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তবে এই চার লেন যে মহা-পাচারের পথ হয়ে উঠেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই পুলিশকর্তাদের বড় অংশের। ইস্ট-ওয়েস্ট করি়ডর এখন রাজ্য এবং কেন্দ্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির আধিকারিকদের একাংশের কাছে ‘পাচার করিডর’ নামেই পরিচিত।
এই মহাসড়কের আশেপাশে তিন দেশের আর্ন্তজাতিক সীমান্ত, একাধিক জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এই সড়ক। কোথাও কোথাও ওই সড়কের পাশেই রয়েছে রেল লাইন। ভৌগোলিক এবং প্রাকৃতিক কারণেই তাই ‘অসম্পূর্ণ’ মহাসড়ককে চোরাচালানকারীরা পাচারের করিডর হিসেবে বেছে নিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। রবিবার রাতেই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কুচলিবাড়ি থেকে ৯৭ বোতল কাশির সিরাপ-সহ এক জনকে ধরে বিএসএফ। কাশির ওষুধ বাংলাদেশে পাচারের পরিকল্পনা ছিল বলে দাবি বিএসএফের।
এই ওষুধও মহাসড়ক দিয়ে লাগোয়া সীমান্ত এলাকায় যায় বলে দাবি বিএসএফের। সম্প্রতি জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে ১১ হাজার বোতল কাশির ওষুধ উদ্ধার হয়। তার কিছু দিন পরেই ১৬ হাজার বোতল উদ্ধার হয়। নানা সামগ্রী পাচারের অভিযোগ জেলা জুড়ে ধরাও পড়ে কয়েক জন। তাদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের অন্য প্রান্তে পাচারের মূল করিডরই হল মহাসড়ক। সম্প্রতি ময়নাগুড়ি উড়ালপুল তৈরি হয়েছে যার ফলে করিডরে যান চলাচলের গতি বেড়েছে। সেটিও চোরাচালানে সুবিধা করে দিয়েছে।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে সেখানকার সীমান্তে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের নজরদারি কমেছে বলে দাবি এ দেশের কিছু গোয়েন্দা সংস্থার। অভিযোগ, বিএসএফের চোখে ধুলো দিয়ে বাংলাদেশে চোরাচালানের প্রবণতা বেড়েছে। সেই চোরাচালানে আনা-নেওয়ার সামগ্রী পরিবহণে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরও ব্যবহৃত হচ্ছে। নামনি অসম হয়ে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার থেকে জলপাইগুড়ি ঢুকে পাচারের ট্রাক, ছোট গাড়ি অথবা যে কোনও যানবাহন সাধারণত শিলিগুড়ির আগে ফুলবাড়ি হয়ে ঘোষপুকুরে ঢুকে যায়। পুলিশ সূত্রের দাবি, শিলিগুড়ি করিডরে সম্প্রতি নজরদারি কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় শিলিগুড়ি শহর এলাকাকে পাশে রেখে ঘুরপথে গ্রামীণ জনপদ হয়ে ফের মহাসড়কে উঠে বিহারে চলে যায় পাচারের গাড়ি।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার উমেশ খণ্ডবহালে বলেন, “কখনও সূত্র মারফত, কখনও নিয়মিত তল্লাশিতে কাশির ওষুধ, গবাদি পশু, হেরোইন উদ্ধার হয়েছে।’’ প্রতিদিন কয়েক লক্ষ যানবাহন চলাচল করে মহাসড়ক ধরে। এই পথে বেশ কিছু উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরাও বসাচ্ছে পুলিশ। তবে অসম থেকে জলপাইগুড়ি আসতে কয়েক বার গাড়ি বদলে ফেলাও হচ্ছে।