Sankar Ghosh

দুই বিধায়ককে আটকাতে আস্ত পুলিশ বাহিনী! ধর্না থেকে টেনেহিঁচড়ে তোলা হল শঙ্কর ঘোষদের

কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার বিরোধিতায় ‘খেলার মাঠে খেলা হবে’ স্লোগান দিয়ে ধর্নায় বসেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:১১
Sankar Ghosh and another BJP MLA detained by Police in Siliguri

ধর্না থেকে টেনেহিঁচড়ে তোলা হয় বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে। —নিজস্ব চিত্র।

শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের ধর্নাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল শহরের সফদর হাসমি চকে। খেলার মাঠে খেলা বাদে অন্য কোনও অনুষ্ঠানে আপত্তি বিধায়কের। পূর্ব ঘোষণা মতো সোমবার বিকেলে স্টেডিয়ামের সামনে ধর্না দিতে যান বিধায়ক। ‘খেলার মাঠে খেলা হবে’— এই স্লোগান দেন বিধায়ক এবং তাঁর সঙ্গীরা। কিন্তু খানিকক্ষণ পরই ধুন্ধুমার কাণ্ড। শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এবং কুমারগঞ্জের বিধায়ক মনোজ ওঁরাও ধর্নার জন্য হাসমি চকে উপস্থিত হতেই বাধা দেয় পুলিশ। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি হয় শঙ্কর, মনোজের এবং বিজেপি কর্মীদের। পরে আটক করার হয় বিধায়ক শঙ্করকে। তাঁকে রাস্তা থেকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তোলে পুলিশ।

Advertisement

অন্য দিকে, পুলিশের গাড়িতে উঠতে উঠতে বিজেপি বিধায়ক মন্তব্য করেন, ‘‘এ রাজ্যে চোরেদের ছেড়ে রাখা হয়। আর সত্যি কথা যারা বলে তাদের তোলা হয় প্রিজন ভ্যানে।’’ তৃণমূলকে নিশানা করে তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজভবনের সামনে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছিল। সেখানে কিন্তু এই পুলিশ প্রশাসন চোরেদের বসিয়ে রেখেছিল।’’ শঙ্কর দাবি করেন, পুলিশ কমিশনার নিজে তাঁকে ফোন করে ১২ তারিখ ধর্নায় না বসার অনুরোধ করেন। বলা হয়, ধর্না দিলে তাঁদের চাকরি চলে যাবে! শঙ্করের কথায়, ‘‘এই কারণেই ধর্না দিতে ১১ তারিখ এসেছি। কিন্তু তার পরেও পুলিশের এমন আচরন!’’ পাশাপাশি, তিনি বলেন, ‘‘এর পরও আমি আমার কথা বলব। আমার কণ্ঠরোধ করা যাবে না।’’

বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর ঘোষণার পরেই কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম ব্যবহারের বিরোধিতা করেন শঙ্কর। তাঁর দাবি, টুর্নামেন্ট বন্ধ করে রাজনৈতিক সভা হচ্ছে। রাজনৈতিক ভাবে সব সময় স্টেডিয়ামকে ব্যবহার করা হচ্ছে। মাঠে সভার বিরোধিতা করে ১১ ডিসেম্বর বিকেল থেকে ১২ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত হাসমি চকে ধর্নায় বসছেন বলে ঘোষণা করেন তিনি। জানান, কোনও দলীয় প্রতীকে নয়, সাধারণ মানুষ হিসাবে ধর্নায় বসার আবেদন জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে। অন্য দিকে, এই ধর্না নিয়ে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব আগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘প্রশাসন তাদের মতো করে ব্যবস্থা নেবে।’’

সোমবার সকাল থেকেই শিলিগুড়ির সফদর হাসমি চক পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ ছিল। মোতায়েন করা হয় জলকামান। সেখান থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম। মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে সেখানে। নিরাপত্তায় কোন খামতি না রাখার জন্য আঁটসাঁট বন্দোবস্ত করে পুলিশ। বিকেলে শঙ্কররা ধর্না দিতে গেলেই দুই বিধায়ক এবং তাঁদের সমর্থনকারীর সঙ্গে পুলিশের বচসা শুরু হয়। সেখান থেকে ধস্তাধস্তি। শেষমেশ দুই বিধায়ককে টেনেহিঁচড়ে ধর্না থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এই ঘটনায় ডিসিপি (ট্র্যাফিক) অভিষেক গুপ্তার প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের পরে ঘটনা সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ অন্য দিকে, বিধায়কদের আটক করে শিলিগুড়ি থানায় নিয়ে গেলে সেখানেও ধর্নায় বসে পড়েন তাঁরা।

Advertisement
আরও পড়ুন