মৃত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। —ফাইল চিত্র।
মহানন্দাপল্লি এলাকায় মাদকের কারবার ক্রমশ বাড়ছে বলে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। তার মধ্যেই নেতা খুনের জেরে এখন সেই এলাকায় নতুন করে চর্চা ছড়িয়েছে। গত ২ জানুয়ারি সকালে এলাকার পুরপ্রতিনিধি তথা তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দুলাল সরকারকে (বাবলা) গুলি করে খুন করা হয়। খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের এক জন এলাকারই যুবক। শুধু তাই নয়, রবিবার যে দুই অভিযুক্তের ছবি প্রকাশ করে পুলিশ পুরস্কার ঘোষণা করেছে, তারাও এই এলাকার বাসিন্দা। এই পরিস্থিতিতে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কে মহানন্দাপল্লির বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দশক আগে মালদহের ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়া থেকে শুরু করে মহানন্দাপল্লি পর্যন্ত এলাকা ছিল দুষ্কৃতীদের ‘স্বর্গরাজ্য’। খুন, চুরি-ছিনতাই লেগেই থাকত। তবে ধীরে ধীরে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া মহানন্দাপল্লিতে দুষ্কৃতীদের দাপট অনেকটাই কমে আসে। স্থানীয়দের অনেকের মতে, এলাকা শান্ত রাখার অন্যতম কারিগর ছিলেন মহানন্দাপল্লি থেকে একাধিক বার নির্বাচিত পুরপ্রতিনিধি দুলাল সরকার।
তবে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, দুষ্কৃতী কার্যকলাপ কিছুটা কমলেও এলাকায় মাদকের কারবার বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে, মহানন্দাপল্লির পাশ দিয়ে বয়ে চলা মহানন্দা নদীর তীরবর্তী এলাকা ও চরে মাদকের কারবারের রমরমা। দাবি, যুবসমাজের একাংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন। মহানন্দপল্লি সংলগ্ন ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর গৌতম দাস এ দিন বলেন, ‘‘মহানন্দা নদী সংলগ্ন এলাকায় মাদকের কারবার বেড়ে গিয়েছে। পুলিশকে জানিয়েছি।’’
দুলাল-খুনের পরে এলাকার বাসিন্দারা এখন আতঙ্কে রয়েছেন। দুলাল খুনের ঘটনায় এলাকারই তিন যুবকের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় সেই আতঙ্ক আরও বেড়েছে। দীপক সরকার নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘বাবলাদা থাকায় আমরা এলাকায় নিরাপদে বাস করছিলাম। কিন্তু ওঁকে যে ভাবে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হল, তাতে আমরা আর এলাকাকে নিরাপদ বলে মনে করতে পারছি না। দু’দশক আগে মহানন্দাপল্লির যে সন্ত্রস্ত পরিস্থিতি ছিল, সেই অবস্থা আবার ফিরে আসবে না তো?’’ জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, মাদকের কারবার বন্ধে ওই এলাকায় নিয়মিত অভিযান চলে। মাদকের কারবারে জড়িত একাধিক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তিনি জানান, পুলিশ পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।