রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
দু’দিন ছুটির পরে বুধবার কাজে যোগ দিয়ে তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ্যপাল নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দীপককুমার রায় ৫ ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন না। সেই থেকে উপাচার্যের নির্দেশে ক্যাম্পাস-ইন-চার্জের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন শিক্ষক প্রশান্ত মহালা। আগামী ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রশান্তকে ওই দায়িত্ব দিয়েছেন দীপক।
বুধবার দুর্লভ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কাজে যোগ দেন। এ দিন দুপুরে তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির সদস্যেরা রেজিস্ট্রারের ঘরে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভকারী সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, উপাচার্য ছুটিতে থাকাকালীন বেআইনি ভাবে একের পর এক সরকারি নির্দেশ জারি করছেন। অথচ সমিতির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মী, রায়গঞ্জ শহর তৃণমূলের সহ সভাপতি তপন নাগের উপর থেকে উপাচার্য ‘সাসপেনশন’ তুলছেন না। উপাচার্য ছুটিতে থাকাকালীন কোন আইনে পর পর সরকারি নির্দেশ জারি করছেন, সে প্রশ্নের জবাবের দাবিতে এ দিন তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীরা দীর্ঘক্ষণ রেজিস্ট্রারের ঘরে বিক্ষোভ দেখান। সমিতির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সুবীর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ উপাচার্য ছুটিতে থাকাকালীন বেআইনি ভাবে ১৩ ডিসেম্বর সরকারি নির্দেশ জারি করে তাঁর অনুমতি ছাড়া রেজিস্ট্রারকে কোনও বৈঠক ও রাজ্য শিক্ষা দফতরের সঙ্গে সমন্বয় না রাখার নির্দেশ দেন। এর আগে উপাচার্য একইভাবে ছুটিতে থাকাকালীন সরকারি নির্দেশিকা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসি’র (ইন্টারনাল কোয়ালিটি অ্যাসিয়োরেন্স সেল) ডিরেক্টরের পদ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সুব্রত সাহাকে সরিয়ে নিজের ঘনিষ্ঠ প্রশান্তবাবুকে ওই দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি কী ভাবে ছুটিতে থাকাকালীন একের পর এক সরকারি নির্দেশিকা জারি করতে পারেন, রেজিস্ট্রারের কাছে সেটাই জানতে চেয়েছি।"
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, রেজিস্ট্রার দুর্লভ আন্দোলনকারীদের এ বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। সমিতির বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যবেক্ষক বিজয় দাসের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি টাকা অপচয় করে গাড়ি ভাড়া করে শিলিগুড়িতে উপাচার্যের বাড়িতে বিভিন্ন ‘ফাইল’ সই করতে পাঠানো হচ্ছে। দুর্লভ বলেন, ‘‘উপাচার্যের নির্দেশ পালন করতে আমি বাধ্য। তাঁর নির্দেশ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ উপাচার্য দীপক ফোন ধরেননি। মোবাইল বার্তাতেও এ বিষয়ে তিনি কোনও জবাব দেননি।
প্রশান্তর যুক্তি, ‘‘উপাচার্য সরকারি ভাবে ছুটিতে থাকলেও তিনি ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন।’’ বিজয়ের কটাক্ষ, ‘‘উপাচার্য-সহ বিজেপিপন্থী কিছু শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘তুঘলকি’ ও স্বেচ্ছাচারের শাসন চালাচ্ছেন। তাঁরা তপনবাবুর উপর থেকে সাসপেনশন না তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। রেজিস্ট্রার সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করলেও তাঁকে উপাচার্য তা করতে দিচ্ছেন না।‘‘ প্রশান্তর দাবি, তপনের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি তদন্ত করছে।