Gour Banga University Controversy

উপাচার্যকে আটকাবেন কী ভাবে? বোসের নির্দেশ পালন নিয়ে বিভ্রান্ত গৌড়বঙ্গ-রেজিস্ট্রার

রজতকিশোর দে-কে গত বছর অগস্টে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য পদে বহাল করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। পরে তাঁকে উপাচার্য পদ থেকে সরিয়ে দেন তিনিই। শিক্ষা দফতর আবার তাঁকে পদে বহাল করে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২:২৬
(বাঁ দিক থেকে) গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য রজতকিশোর দে, রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাস এবং আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।

(বাঁ দিক থেকে) গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য রজতকিশোর দে, রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাস এবং আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজভবন সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। উপাচার্য রজতকিশোর দে-র দফতর সিল করার নির্দেশ দিয়েছে রাজভবন। ওই মর্মে একটি ইমেল শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌঁছে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাসের কাছে। কিন্তু রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নির্দেশ কী ভাবে কার্যকর করা হবে, তা নিয়ে অনিশ্চিত তিনি। জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।

Advertisement

রজতকিশোরকে গত বছর অগস্টে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য পদে বহাল করেছিলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য বোস। পরে তাঁকে উপাচার্য পদ থেকে সরিয়ে দেন তিনিই। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ী উপাচার্য পদে আবার রজতকিশোরকে পুনর্বহাল করে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। সম্প্রতি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল সমর্থিত ওয়েবকুপার বৈঠক হয়, যার সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। অন্যান্য তৃণমূল নেতা তাতে উপস্থিত ছিলেন। এর পরেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। ভোটের মুখে এই ধরনের বৈঠক আয়োজন করার জন্য তিনি রাজ্য সরকারের কাছে শিক্ষামন্ত্রীকে অপসারণের সুপারিশ করেন। নির্দেশ দেন উপাচার্যের দফতর সিল করার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, উপাচার্যের দফতর বন্ধ করে দিয়ে তাঁকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিতেও বারণ করা হয়েছে রাজভবনের তরফে। কিন্তু আপাতত সোমবারের আগে সেই নির্দেশ কার্যকরের বিষয়ে পদক্ষেপ সম্ভব নয়। রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ আমি দফতর থেকে বেরোনোর সময় ইমেল দেখতে পাই। রাজভবন থেকে বলা হয়েছে, উপাচার্যের চেম্বার বন্ধ করে দিতে হবে। তাতে অসুবিধার সম্মুখীন হলে প্রশাসনের সাহায্য নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু রেজিস্ট্রার হিসাবে আমি উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বারণ করার মতো অবস্থানেই নেই। কারণ, উনি রাজ্য সরকার মনোনীত উপাচার্য। রাজভবন ওঁকে ঢুকতে বারণ করেছে। উনি এখন ছুটিতেও আছেন। আমি একক ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারব না।’’

বিশ্বজিৎ আরও বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্‌জ়িকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে আমি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। কাউন্সিলে আচার্য, উপাচার্য, অধ্যাপকদের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। রেজিস্ট্রার একা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। আপাতত মৌখিক ভাবে বিষয়টি কাউন্সিলের সদস্যদের জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জন ডিন, উচ্চ শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমি যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব। শনিবার এবং রবিবার শিক্ষা দফতর বন্ধ। তাই সোমবারের আগে কিছু করা যাচ্ছে না।’’

শনিবার সকালে রেজিস্ট্রার জানান, রাজ্যপালের চিঠি পাওয়ার পরে তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু সেখান থেকেও এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। ইসির সদস্যেরাও কিছু জানাননি। তাই এখনও রাজ্যপালের নির্দেশ কার্যকর করা যায়নি।

আরও পড়ুন
Advertisement