ছুটির দিনেও বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আগাছা সাফাইয়ের কাজ চলছে। ছবি: গৌর আচার্য।
প্রায় দু’মাস একটানা অবস্থান বিক্ষোভের পর শুক্রবার রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলন উঠে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার ছুটির দিনেও খোলা রইল সেখাকার বিভিন্ন বিভাগ। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সিমেস্টারের পড়ুয়াদের পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পরীক্ষা ও পড়ুয়াদের বিভিন্ন বৃত্তি-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার কাজ স্বাভাবিক হতে প্রায় দু’সপ্তাহ সময় লাগবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি। এ দিকে, আন্দোলন উঠতেই এক মাসেরও বেশি সময় পরে আজ, রবিবার স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দীপককুমার রায়। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে ওই অনুষ্ঠানে উপাচার্য হাজির হয়ে বক্তব্য রাখবেন বলে উল্লেখ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীদের সংগঠন সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পর্যবেক্ষক বিজয় দাস দাবি করেন, পড়ুয়াদের পঠনপাঠনের স্বার্থে তাঁরা আন্দোলন তুলে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছিলেন, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরলে শিক্ষাকর্মী তপন নাগের উপর থেকে সাসপেনশন তোলার দাবিতে তাঁকে ঘেরাও করা হবে। সেই অনুযায়ী আজ, রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যকে সমিতির সদস্যরা ঘেরাও করবেন কিনা, সেই প্রশ্নে সুর বদল করে বিজয় বলেন, “তপনবাবুর উপর থেকে ‘সাসপেনশন’ তোলা হবে কিনা, সেই বিষয়ে সোমবার আমরা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলব। তার পরেই আমরা বিজেপিপন্থী উপাচার্যকে ঘেরাও করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’’
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফাইকর্মীরা বিভিন্ন শৌচাগার, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আবর্জনা ও আগাছা সাফাই করেছেন। এনএসএসের পড়ুয়ারাও আলাদা করে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সাফাইয়ের কাজ করেন। রেজিস্ট্রার দুর্লভ বলেন, ‘‘শিক্ষাকর্মীরা গত প্রায় দু’মাস ধরে অনিয়মিত কাজ করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্বিক সাফাইয়ের কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। সব কাজ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। আপাতত, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ছুটি মঞ্জুর করা হবে না।’’
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে গত বছর অগাস্ট মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মী তথা সমিতির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি তপনকে 'সাসপেন্ড' করেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দীপক। তাঁর উপর থেকে বিনা শর্তে ‘সাসপেনশন’ তোলার দাবিতে গত বছরের ১২ নভেম্বর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সমিতির তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীরা একটানা অবস্থান বিক্ষোভ করেন। এই পরিস্থিতিতে গত ৫ ডিসেম্বর থেকে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন না।