—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এ বছর বর্ষার আগে উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন নদী থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা রুখতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। প্রশাসনিক সূত্রে দাবি, জেলার রায়গঞ্জ, করণদিঘি ও চোপড়া ব্লকের কুলিক, নাগর ও মহানন্দারচরের জমিতে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি শুরু হয়েছে। ওই কাজে নামানো হয়েছে পুলিশ ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দাদেরও।
এক মাসে ওই তিনটি ব্লকে নদীর চর থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলার অভিযোগের ২২১টি ঘটনায় অভিযুক্তদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। ওই কাজে ব্যবহৃত বহু ট্রাক্টর ও ট্রাক আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি, একাধিক ঘটনায় করণদিঘির নাগর নদীর চর থেকে বেআইনি ভাবে বালি তুলে তা ট্রাক্টরে বিহারে পাচারের অভিযোগের ঘটনাও সামনে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে, রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, ইসলামপুর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকার বালি বিক্রির জায়গাগুলিতেও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের নজরদারি শুরু হয়েছে। ওই দফতরের দাবি, বালি বিক্রির প্রতিটি এলাকাতে বালির বৈধ নথি ও রাজ্য সরকারকে রাজস্ব দেওয়ার প্রমাণপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সহ-আধিকারিক শ্রদ্ধা সুব্বা বলেন, “জেলায় রাজ্য সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেআইনি ভাবে বালি তোলা রুখতে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর কোনও মন্তব্য করব না।” জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের দাবি, মূলত রায়গঞ্জের ঠাকুরবাড়ির কুলিক নদীর চর, করণদিঘির নাগর নদীর চর ও চোপড়ার মহানন্দা নদীর চর থেকে দুষ্কৃতীরা বেআইনি ভাবে বালি তুলে পাচার ও বিক্রি করছে বলে অভিযোগ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকারকে রাজস্ব দেওয়া হচ্ছে না। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ও পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে দুষ্কৃতীরা নম্বরপ্লেটহীন ট্র্যাক্টর ও ট্রাক বালি তোলার কাজে ব্যবহার করছে। অনেক সময়ে রাতের অন্ধকারে নদী থেকে বালি তোলার পর গাড়িগুলি দ্রুতগতিতে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় পুলিশ ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্মীরা গাড়িগুলি আটকানোর সাহস পাচ্ছেন না। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “সরকারি অনুমতি ছাড়া রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দুষ্কৃতীরা কুলিক, নাগর ও মহানন্দা নদীর চর থেকে বালি তুলে পাচার করছে। নদীর ধারে বিভিন্ন এলাকায় বড় গর্ত ও খাল তৈরি হচ্ছে। এমন চলতে থাকলে বর্ষায় নদীর গতিপথ বদলে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। বর্ষার অনেক আগে বেআইনি বালি তোলা রুখতে অভিযান শুরু হয়েছে।”