Strike in North Bengal

অফিসে হাজিরা কম, ব্যাঙ্কে ঝুলল তালা! বিজেপির ডাকা বন্‌ধে মিশ্র প্রতিক্রিয়া উত্তরবঙ্গে

বিজেপি বিধায়ক-সহ কর্মীদের থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় অন্যান্য বিজেপি কর্মী পুলিশের গাড়ি রুখে দেন হিলকার্ট রোডে। গাড়ির সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন তাঁরা। ভাঙচুর চালানো হয় সরকারি বাসে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:০৭
Mixed impact in BJP’s strike in North Bengal

বন্‌ধের সমর্থনে রাস্তায় বিজেপি কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

কালিয়াগঞ্জের ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্‌ধে মিশ্র প্রভাব দেখা গেল উত্তরবঙ্গে। শিলিগুড়ি ও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এলাকায় শুক্রবার সকাল থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বেলা বাড়তেই দেখা গিয়েছে অন্য রকম ছবি। ভাড়াগাড়ির জন্য বাগডোগরা বিমানবন্দরের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেল যাত্রীদের। সকালের দিকে সরকারি এবং বেসরকারি বাস পরিষেবা চালু থাকলেও ধীরে ধীরে তার সংখ্যাও কমতে থাকে। শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় বিজেপি কর্মীদের দেখা গেল হাতজোড় করে বন্‌ধ সমর্থনের জন্য আর্জি জানাচ্ছেন। আবার বন্‌‌ধ ঘিরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে অশান্তিও দেখা গিয়েছে। আটক হয়েছেন বিজেপি বিধায়করা।

শুক্রবার বন্‌ধের দিন সকাল ১০টা নাগাদ ছিল এক রকম পরিস্থিতি। দুপুরের পর আর এক রকম। বন্‌ধে নেতৃত্ব দিতে যান শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ-সহ শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ। তখন সম্পূর্ণ ভাবে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে হিলকার্ট রোড সংলগ্ন সফদর হাশমি চক-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায়। রাস্তায় রাস্তায় অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিজেপি কর্মীদের। ঘটনাস্থল থেকে আটক হন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর এবং আনন্দময়।

Advertisement

অন্য দিকে, আটক বিজেপি বিধায়ক-সহ কর্মীদের থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় অন্যান্য বিজেপি কর্মী পুলিশের গাড়ি রুখে দেন হিলকার্ট রোডে। গাড়ির সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন তাঁরা। ভাঙচুর চালানো হয় সরকারি বাসে। জোর করে হিলকার্ট রোডের বিভিন্ন দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।

শিলিগুড়ি মহকুমার মাটিগাড়া, বাগডোগরা, নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি, বিধাননগরে ভাল প্রভাব পড়ে বন্‌ধের। সকাল থেকে মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়। সরকার, বেসরকারি বাস থামিয়ে চলে বিক্ষোভ। বাগডোগরায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে তালা ঝুলিয়ে দেন বিজেপি কর্মীরা। খড়িবাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহ করা হয়। বাধার সম্মুখীন হতে হয় সরকারি আধিকারিকদেরও।

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় অন্যান্য দিনের তুলনায় যানবাহন চলাচল অনেকটাই কম ছিল। এলাকাভিত্তিক বাজার খোলা থাকলেও হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান মার্কেট-সহ বিভিন্ন এলাকার দোকানবাজার বন্ধ ছিল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও পড়ুয়াদের সংখ্যা ছিল যথেষ্ট কম। সরকারি দফতর খোলা ছিল। তবে অন্যান্য দিনের চেয়ে কর্মীদের উপস্থিতির হারও ছিল কম। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তাঁদের বন্‌ধ সফল। যদিও ‘বন্‌ধের সংস্কৃতি’র সমালোচনা শোনা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের গলায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখন আছেন জলপাইগুড়িতে। একটি সভা থেকে তিনি বিজেপির এই বন্‌ধের তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁর অভিযোগ, এই বন্‌ধের ফলে অফিসযাত্রী থেকে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ প্রভাবিত হয়েছেন। অফিসে ঢুকতে দেরি হলে অনেক কর্মীর মাইনে কাটা যায়। তাই রাজ্য সরকার বন্‌ধ সংস্কৃতির ঘোর বিরোধিতা করে।

আরও পড়ুন
Advertisement