Kalbaisakhi in Jalpaiguri

রাত জেগে জলপাইগুড়ি ঘুরে দেখলেন, আড়াইটের পর হোটেলে ঢুকলেন মমতা, গেলেন রাজ্যপালও

ঝড়ে বিধ্বস্ত জলপাইগুড়িতে সোমবার সকালেই পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে তিনি রবিবারের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন। যাবেন শুভেন্দু অধিকারীও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫৮
Mamata Banejee visits storm hit Jalpaiguri Governor CV Anand Bose to reach in the morning

রাতে জলপাইগুড়ির হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।

রাত জেগে জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গেও কথা বলেন। জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ির যে যে এলাকা রবিবারের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে সব জায়গায় রাতেই গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিজে খতিয়ে দেখেছেন। পরিস্থিতির তদারকি করেছেন। সব মিটিয়ে তাঁর হোটেলে ফিরতে রাত আড়াইটে বেজে গিয়েছিল। আপাতত মালবাজারের চালসার একটি হোটেলে আছেন মমতা।

Advertisement

জলপাইগুড়ির উদ্দেশে সোমবার ভোরেই রওনা হয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ভোর ৬টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বাগডোগরার পথে রওনা দেন তিনি। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পৌঁছন বাগডোগরায়। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে জলপাইগুড়ির ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। যাঁরা এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘জলপাইগুড়িতে ঝড়ে প্রাণহানি ঘটেছে। অনেকে আহত। আমি উদ্বিগ্ন। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সকলে একসঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজ করছেন। আমি ওখানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব, মানুষের সঙ্গে কথা বলব। যা যা করা সম্ভব, করব।’’

বাগডোগরায় পৌঁছে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আমি নিজে পরিস্থিতির তদারকি করব। মানুষের সঙ্গে কথা বলব। তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা শুনব। যা যা করা সম্ভব করব। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এবং সংশ্লিষ্ট অন্য়ান্য দফতরের সঙ্গেও আমি কথা বলব।’’

রবিবার আচমকা ঝড়বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ি শহর, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রাতে জানান মুখ্যমন্ত্রী। যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে দু’জন জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা। এক জন গোসালা মোড়ে এবং অন্য জন সেন পাড়ায় থাকতেন। আরও দু’জন ময়নাগুড়ির বার্নিশ এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। সকলের বাড়িতেই রাতে গিয়েছিলেন মমতা। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। ঝড়ের তাণ্ডবে বহু মানুষ জখম হয়েছেন। আহতের সংখ্যা শতাধিক। তাঁরা কেউ কেউ জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কয়েক জনকে ভর্তি করানো হয়েছে শিলিগুড়ির হাসপাতালে। রাতেই হাসপাতালে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন মমতা।

রবিবার রাতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে মমতা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার পাশে আছে। এখন যেহেতু এমসিসি চলছে, তাই প্রশাসন যা করার করবে। একটা বাচ্চাকে নেওটিয়া হাসপাতালে আনা হচ্ছে, ওটা কাল বিকেলে অভিষেক এসে দেখে নেবে। প্রশাসন যা করার করবে। সবটা এখানে বলছি না।’’ রাতে তিনি আরও জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য প্রশাসন যা করার করছে। ত্রাণ সরবরাহের কাজ চলছে। এ ছাড়া, জেলা ও ব্লক প্রশাসন, পুলিশ, ডিএমজি এবং কুইক রেসপন্স টিম বিপর্যয় মোকাবিলায় কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাত জেগে সেই কাজের তদারকিও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং।

জলপাইগুড়িতে সোমবার সকালে যাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘জলপাইগুড়িতে প্রায় ৮০০ বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বাড়িগুলি টিন দিয়ে তৈরি ছিল। এই সময়ে সরকারের উচিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। কারণ বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে সরকার আদর্শ আচরণবিধির আওতায় পড়ে না। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও জলপাইগুড়িতে কাজ করছে। তাদের বেশি করে দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা রাজনৈতিক কর্মী বা জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনী বিধির কারণে বেশি কিছু করতে পারব না। কেবল পাশে থাকতে পারি। তাই সংগঠনগুলিকে দায়িত্ব নিতে হবে। আশা করব অন্য রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসন রাজনীতি দূরে রেখে কাজ করবে।’’ বিকেলে জলপাইগুড়িতে পৌঁছে যাবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার সকালেও আবহাওয়া প্রতিকূল জলপাইগুড়িতে। উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বইছে। আকাশের মুখও ভার। মাঝেমাঝে মেঘ ডাকছে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে উত্তরের জেলাগুলিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement