Lone Tusker

শিলিগুড়ির কাছে দাঁতালের তাণ্ডব! শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড়, মৃত্যু, চুরমার বাড়ি, ঘর, গাড়িও

শিলিগুড়ি শহরের খুব কাছেই বাগডোগরা। সেখানে যে ভাবে দাঁতালটি তাণ্ডব চালিয়ে গেল তাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে শহরেও। হাতির হানায় মৃত ব্যক্তি সরকারি ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাগডোগরা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:২৩
দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দাঁতাল।

দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দাঁতাল। — নিজস্ব চিত্র।

শিলিগুড়ির কাছে আবারও দাঁতালের তাণ্ডব। এ বার ঘটনাস্থল শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বাগডোগরার বিভিন্ন এলাকা। হাতিটি শুঁড়ে পেঁচিয়ে এক ব্যক্তিকে আছাড় মারে। হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। হাতির তাণ্ডবে ভেঙেছে এলাকার একাধিক ঘরবাড়িও। বহু চেষ্টার পর বন দফতর হাতিটিকে লোকালয় থেকে দূরে সরাতে সক্ষম হয়েছে।

Advertisement

শনিবার সকালে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে তাণ্ডব চালাতে দেখা গেল একটি অতিকায় দাঁতালকে। হাতির তাণ্ডবে বাগডোগরার নতুন পাড়া, ভূজিয়াপানি, মুলাইজোত, মসজিদ পাড়া-সহ একাধিক গ্রামের লোকজন সন্ত্রস্ত। জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে এলাকায় অতিকায় হাতিটিকে দেখতে পান গ্রামবাসীরা। চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। গ্রামে ঢুকতেই হুলস্থুল কাণ্ড ঘটে যায়। এক ব্যক্তিকে পেছন থেকে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে মাটিতে আছড়ে ফেলে দাঁতালটি। গুরুতর ভাবে আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পেশায় রাজমিস্ত্রি মৃত ব্যক্তির নাম দিলীপ রায় (৪৫)।

অন্য দিকে, নতুন পাড়ায় একটি চলন্ত গাড়িতে ধাক্কা মারে হাতিটি। আতঙ্কে গাড়ির ভেতরে বসেছিলেন চালক। হাতি চলে গেলে গাড়ি থেকে বেরিয়ে কোনও মতে প্রাণে বাঁচেন ওই ব্যক্তি। তবে গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাগডোগরা, ভুজিয়া পানি-সহ নতুন পাড়ার একাধিক এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে বেশ কিছু বাড়িঘরও ভাঙচুর করে হাতিটি।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বাগডোগরা রেঞ্জের বনকর্মীরা। হাতিটিকে তাড়িয়ে লোকালয় থেকে দূরে স্থানান্তরিত করে নিয়ে যাওয়া হয়। বাগডোগরা বন বিভাগের রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া বলেন, ‘‘ওই এলাকায় চারটে দাঁতাল রয়েছে। যারা একাই ঘুরে বেড়ায়৷ হাতিটি লোকালয়ে প্রবেশের অনেক ক্ষণ পর গ্রামবাসীরা আমাদের জানান। আপাতত হাতিটিকে বাগডোগরা ব্যাংডুবি সংলগ্ন সেনা ক্যাম্পের পেছনের ঝোপে আটকে রেখেছেন বনকর্মীরা। ওখান থেকেও হাতিটি বার হওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি৷ এক জনের মৃত্যু হয়েছে৷ সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ পাবে সেই পরিবারটি।’’

ভুজিয়াপানি এলাকার বাসিন্দা নমিতা বর্মণ বলেন, ‘‘সকালে দোকান খোলার সময় দেখি, পেছন থেকে বিশাল হাতি আসছে। কোনও ভাবে সেখান থেকে সরে গিয়ে প্রাণে বাঁচি। গোটা গ্রামের মানুষ তটস্থ। অন্য গ্রামের এক জনকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে মেরে ফেলেছে শুনলাম হাতিটি।’’ গাড়িচালক রাজু রায় বলেন, ‘‘গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎই হাতিটি গাড়ির সামনে চলে আসে। ভয়ে আমি গাড়ির ভেতরই বসে থাকি। গাড়িতে ধাক্কা মেরে মেন রোড ধরে সোজা চলে যায়। গাড়ির অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে। রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement