—প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস ঘিরে ফের মাথাচাড়া শাসক দলের দ্বন্দ্ব। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১২টায় কোচবিহারের পানিশালায় পতাকা উত্তোলন করেন শাসক দলের দুই নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও পার্থপ্রতিম রায়। বুধবার সকালে সেই পতাকা নামিয়ে ফের নতুন করে পতাকা তোলেন দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের অনুগামীরা। পানিশালা অঞ্চলের সভাপতি অভিজিৎ ঘনিষ্ঠ মজিবর রহমান বলেন, ‘‘রাতের পতাকা তোলার বিষয়টি আমরা জানি না। সকালে আমার পতাকা তুলেছি।’’
এখানেই শেষ নয়, এ দিন কোচবিহার শহরেও আলাদা- আলাদা করে প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করে দুই পক্ষ। দেশবন্ধু মার্কেটে দলের শ্রমিক সংগঠনের একটি সভা থেকে রবীন্দ্রনাথকে সামনে রেখে জেলায় দল পরিচালনা করার জন্য সওয়াল করেন পার্থপ্রতিম।
পার্থপ্রতিম বলেছেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঘোষে দলের স্তম্ভ। তাঁকে সরিয়ে রাখলে ভুল বার্তা যাবে। রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সামনে রেখে, অন্য নেতাদের সামনে রেখে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। তা হলে দল আরও শক্তিশালী হবে। পর-পর নির্বাচনী জয় কারও ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়। এটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আপামর তৃণমূল কর্মীর কৃতিত্ব।’’ ওই বৈঠকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘দল কারও একার নয়। সবাই মিলে দলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। যাতে আগামী বিধানসভায় জেলার ন’টি আসনেই আমরা জয়ী হই।’’ দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক অবশ্য ওই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। দলের আর এক প্রবীণ নেতা আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা জেলা পার্টি অফিসে দলের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করি। দেশবন্ধু মার্কেটে শাখা সংগঠনের অনুষ্ঠান হয়েছে। যার যেখানে ভাল লেগেছে গিয়েছে।’’
কোচবিহারে কিছুদিন ধরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আবহ তৈরি হয়। নিজেদের মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে এক হন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও পার্থপ্রতিম রায়। অভিযোগ, সেই সময় থেকেই দলের মধ্যে একটি আলাদা গোষ্ঠী তৈরি করার চেষ্টা শুরু করেন দু’জন। তাঁদের সঙ্গে রয়েছে কৃষক সংগঠনের জেলা সভাপতি খোকন মিয়াঁ এবং শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি পরিমল বর্মণ। অভিযোগ, পরিমল ওই দু’জন নেতাকে শ্রমিক সংঠনের কর্মসূচিতে ডাকলেও, বাকিদের ডাকেননি। কেউই অবশ্য গোষ্ঠী বিরোধ মানতে চাননি। পার্থ বলেন, ‘‘কোথাও কোনও বিরোধ নেই। বরং আমরা আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি।’’ পরিমল বলেন, ‘‘আমি জেলা সভাপতি-সহ শহরের সব নেতাকেই মেসেজ করে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করেছি। তার মধ্যে দু’জন এসেছিলেন।’’