Higher Secondary Exam 2024

পাহাড়ে উজ্জ্বল নেপালি ভাষার তিন ছাত্রছাত্রী

রাজ্যে মেধা তালিকায় দার্জিলিং বা কালিম্পং থেকে এ বার কেউ নেই। সে ক্ষেত্রে নেপালিভাষীদের মধ্যে এই তিন পড়ুয়ার কৃতিত্বে কিছুটা খুশির হাওয়া পাহাড়ে।

Advertisement
সৌমিত্র কুন্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৪ ০৮:৫৬
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নেপালি ভাষাভাষীদের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম হয়েছেন কালিম্পং এবং দার্জিলিঙের তিন জন। বুধবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে ফল ঘোষণার সময় জানানো হয়, তাঁরা হলেন কালিম্পং গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের রোজি খাতুন, স্কটিশ ইউনিভার্সিটিজ় মিশন ইনস্টিটিউশনের বিশান্ত বাসনেট এবং দার্জিলিঙের সোনাদার হোলি ক্রস স্কুলের মমতা আগরওয়াল। এঁদের তিন জনেরই প্রথম ভাষা নেপালি। তিন জনেই ৪৬১ নম্বর (৯২.২ শতাংশ) পেয়েছেন।

Advertisement

গত বছর উচ্চ মাধ্যমিকে কালিম্পং পাশের হারে দ্বিতীয় হয়েছিল। এ বছর চার নম্বরে। পাশের হার ৯২.৫১ শতাংশ।

রাজ্যে মেধা তালিকায় দার্জিলিং বা কালিম্পং থেকে এ বার কেউ নেই। সে ক্ষেত্রে নেপালিভাষীদের মধ্যে এই তিন পড়ুয়ার কৃতিত্বে কিছুটা খুশির হাওয়া পাহাড়ে। কালিম্পঙের কৃষক পরিবারের ছেলে বিশান্ত। বাবা তেজ বাহাদুর, মা চঞ্চলা বাসনেট। এক দাদা পড়াশোনা করছেন। কষ্ট করেই তাঁকে পড়াশোনা চালাতে হয় বলে জানালেন বিশান্ত। আপাতত কালিম্পংয়ের কলেজে ভর্তি হতে চান অর্থনীতির এই ছাত্র। ভবিষ্যতে ঠিক কোন পেশায় যাবেন তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন। বিশান্ত বলেন, ‘‘ফলাফলে খুশি। আরও অনেক দূর যেতে হবে।’’

রোজির বাড়ি কালিম্পংয়ের গুম্বাহাটায়। সেখান থেকে রোজ ১৫-২০ মিনিট হেঁটেই বাড়ি যান রোজি। স্কুলে যাওয়ার সময় পাহাড়ি পথে সব সময় গাড়ি মেলে না। বাবা আহমেদ আলি গাড়িচালক। মা সাবিনা খাতুন গৃহবধূ। রোজির এক দাদা এবং এক দিদি রয়েছেন। দাদা শাহির আলিও ৬৫ শতাংশ পেয়ে স্কটিশ ইউনিভার্সিটিজ় মিশন ইনস্টিটিউশন থেকে এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেন। রোজির দিদি কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া।

ভবিষ্যতে কী হতে চান রোজি এখনও ঠিক করেননি। আপাতত কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স নিয়ে ভর্তি হবেন বলে ঠিক রয়েছে। কালিম্পংয়েই কলেজে পড়ার কথা চিন্তাভাবনা করছেন।

সোনাদার বাসিন্দা মমতার বাবা প্রয়াত উমেশ আগরওয়াল। মা উষা আগরওয়াল দোকান চালান। দোকানের আয়েই একমাত্র মেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। হোলি ক্রস স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে পড়ছেন মমতা। কলা বিভাগের ছাত্রী মমতার কথায়, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্টে আমি খুশি। কলেজে ভর্তি হব। তবে ভবিষ্যত নিয়ে বিশদে কিছু ভাবিনি।’’

মাধ্যমিকে পাশের হারে কালিম্পং প্রথম হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকে পিছিয়ে কেন? স্কুল পরিদর্শক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘গত বছর পাশের হারে উচ্চ মাধ্যমিকে দ্বিতীয় হয়েছিল। এ বছর একটু খারাপ হয়েছে। পর্যালোচনা করে দেখা হবে। তবে নেপালি প্রথম ভাষার তিন জনের ফলাফলে সকলেই খুশি।’’

তিনি জানান, ২০২২ সালের মাধ্যমিকের যে ‘ব্যাচ’ ছিল, তার ফল ভাল ছিল না। এ বছর তাঁরাই উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছিলেন। তবে তাঁর কথায়, পাহাড়ে দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করেই প়ড়াশোনা চালাতে হয় বেশির ভাগ পড়ুয়াকে।

আরও পড়ুন
Advertisement