এই ভাবেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বর্জ্যের স্তূপ। —ফাইল চিত্র।
রাস্তার দু’ধারে যত্রতত্র পড়ে রয়েছে আবর্জনা। কোথাও তা জমতে-জমতে মস্ত স্তূপ। দুর্গন্ধে টেকা দায় আশপাশের এলাকায়। রাস্তায় হাঁটতে-চলতে গিয়ে নাকে চাপা দিতে হচ্ছে পথচারীদের। এই ছবি ফালাকাটার। আলিপুরদুয়ার জেলার নতুন এই পুরসভা তৈরি হয়েছে ২০২১ সালে। ফালাকাটায় ২০২২ সালে প্রথম পুরভোট হয়। নতুন এই পুরসভার ১৮টি আসনের সব ক’টিতে জয়ী হয়ে বোর্ড গঠন করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। কিন্তু পুরসভা হওয়ার ফলে শহরের তকমা পেলেও ফালাকাটা এখনও সেই তিমিরেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
অভিযোগ, পুরসভা গঠনের পর শহর লাগোয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একাধিক বার সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প গড়তে তৎপর হয় স্থানীয় এই পুরসভা। কিন্তু এলাকাবাসীর বাধায় সেই কাজ করা যায়নি। এরই মধ্যে বাড়ি-বাড়ি বর্জ্য সংগ্রহের জন্য রাজ্যের তরফে ফালাকাটা পুরসভাকে প্রায় সতেরো হাজার বালতি দেওয়া হয়। দেওয়া হয় বর্জ্য সংগ্রহের গাড়িও। কিন্তু অভিযোগ, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প চালু না হওয়ায় ফালাকাটা শহরে বাড়ি-বাড়ি থেকে এখনও পর্যন্ত বর্জ্য সংগ্রহ চালু করতে পারেনি পুরসভা। ফলে গুদামেই রয়ে গিয়েছে বালতি -গাড়ি।
যদিও ফালাকাটার পুরকর্তারা জানিয়েছেন, সব বাধা কাটিয়ে শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই কাজও ধীর গতিতে চলছে বলে অভিযোগ। ফলে অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন, বাড়ির পাশে ফাঁকা জমিতে আবর্জনা ফেলতে। অনেকে আবার রাস্তার দুধারে ফাঁকা জায়গাতেও আবর্জনা ফেলছেন বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, সেই আবর্জনা সাফাইয় উদাসীন পুরসভা। ফলে জমছে আবর্জনা স্তূপ। সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সুভাষ কলোনির বিএসএনএল অফিস ও মাঠ লাগোয়া রাস্তার উপরে, সুইপার লেনের সিসি রোড ছাড়াও পোস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকা, নেতাজি রোডের সাপটানা নদীর মধ্যে পচা আনাজ, সেলুন দোকানের আবর্জনা ফেলা হয়। জনবসতিপূর্ন এলাকাগুলি যেন নরককুণ্ড! বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব।
ফালাকাটার বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মণের অভিযোগ, “পুরসভার প্রথম ভোটে তৃণমূলের প্রচারের অন্যতম বিষয় ছিল সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প তৈরি সহ শহরের আবর্জনা পরিষ্কার। কিন্তু পুরভোটে জয় পেতেই বিষয়টি ভুলে গিয়েছেন বোর্ডের সদস্যেরা। ফালাকাটায় পুর পরিষেবা দিতে ব্যর্থ বর্তমান তৃণমূল বোর্ড।” পুরপ্রধান প্রদীপকুমার মুহুরি অবশ্য বলেন, “শহরের ৩নম্বর ওয়ার্ডে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে সীমানা পাঁচিল তৈরির কাজ চলছে। প্রকল্প চালু হয়ে গেলেই শহরের প্রতি বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ শুরু হবে। এই মুহূর্তে সেই কাজ করছে একটি সংস্থা।” যদিও তা নিয়মিত হয় না বলে ক্ষোভ স্থানীয়দের।