Flood situation in North Sikkim

উত্তরবঙ্গে বিপদসীমা ছুঁতে পারে তিস্তার জল! উত্তর সিকিমে এখনও আটকেই রয়েছেন ১২০০ পর্যটক

উত্তর সিকিমে দুর্যোগের মেঘ এখনও কাটেনি। প্রতিনিয়ত বৃষ্টি হচ্ছে পাহাড়ি রাজ্যে। সিকিম আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে উত্তর সিকিমে প্রায় ২ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪ ১৩:১১
ফুঁসছে তিস্তা।

ফুঁসছে তিস্তা। ছবি: পিটিআই।

এখনও উদ্বেগজনক উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি। বিপদসীমার কাছ দিয়ে বয়ে চলেছে তিস্তা। শুক্রবার রাতেও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা তিস্তার ভয়াবহতাকে আরও উস্কে দিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, তিস্তায় জলস্তর যে ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে। তিস্তার জলস্তর বিপদসীমার একেবারে কাছে রয়েছে। ফলে কালিম্পং জেলার তিস্তাবাজার-সহ তিস্তার নিম্ন অববাহিকা থেকে স্থানীয়দের সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জলস্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে শনিবার সকালে গজলডোবার তিস্তা ব্যারেজ থেকে প্রায় ১১০০ কিউসেক জল ছাড়া রয়েছে। ব্যারেজে ছ’টি লকগেট খোলা রাখা হয়েছে বলেও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

Advertisement

অন্য দিকে, উত্তর সিকিমে দুর্যোগের মেঘ এখনও কাটেনি। প্রতিনিয়ত বৃষ্টি হচ্ছে পাহাড়ি রাজ্যে। সিকিম আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে উত্তর সিকিমে প্রায় ২ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী তিন-চার দিনও বৃষ্টিপাতের একই পরিস্থিতি থাকবে বলেই জানিয়েছে সিকিম হাওয়া অফিস। এই পরিস্থিতিতে উত্তর সিকিমে বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে ছোট বড় ধস নেমেছে। আটকে বহু পর্যটক। পরিস্থিতি এমন যে, পর্যটনের জন্য বিখ্যাত লাচুংয়ের সঙ্গে গোটা রাজ্যেরই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বিচ্ছিন্ন টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থাও। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বিপর্যয়ের জেরে সিকিমে এখনও ১২০০ পর্যটক আটকে রয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গের। তা ছাড়া রয়েছেন ১৫ জন বিদেশি।

এই পরিস্থিতিতে আটকে থাকা পর্যটকদের উদ্ধার করতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, তিস্তায় সেতু তলিয়ে যাওয়ার কারণেই পর্যটকদের উদ্ধার করা আরও কঠিন হয় পড়েছে। পর্যটকদের উদ্ধারের জন্য ভারতীয় বায়ুসেনার থেকে সাহায্য চেয়েছে সিকিম প্রশাসন। তবে সিকিমের হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে উত্তর সিকিমের যা আবহাওয়া, তাতে পর্যটক উদ্ধার করতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে পারে সেনার হেলিকপ্টার। বৃষ্টি এবং মেঘের কারণে দৃশ্যমানতা কম হওয়ায় হেলিকপ্টার অবতরণে সমস্যা হতে পারে। বায়ুসেনার পক্ষে উদ্ধারকাজ চালানোও কঠিন হতে পারে বলে মনে করছে হাওয়া অফিস।

এই পরিস্থিতিতে পর্যটকেরা যে সমস্ত হোটেল এবং হোমস্টেগুলিতে রয়েছেন, তাঁদের সেখানেই নিরাপদে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। তাঁদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জোগান দেওয়া হচ্ছে। সিকিম সরকারের সঙ্গে হাত লাগিয়ে ধস সরিয়ে রাস্তা তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছে সেনাবাহিনী। টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থাও স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে প্রশাসনের তরফে।

উল্লেখযোগ্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সিকিমে আটকে পড়া পশ্চিমবঙ্গের পর্যটকদের জন্য হেল্পলাইন চালু করেছে রাজ্য সরকার। শুক্রবার কালিম্পঙের জেলাশাসকের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব সিকিম জেলার রংপোতে পর্যটকদের উদ্ধারের কাজ তদারকির জন্য তৈরি হয়েছে একটি হেল্পডেস্ক। সেই ডেস্কের দুই আধিকারিক রবি বিশ্বকর্মা (৮৭৬৮০৯৫৮৮১) এবং পুষ্পজিৎ বর্মণের (৯০৫১৪৯৯০৯৬) মোবাইল নম্বরও রয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement