Vitamin C Tablets Crisis

‘সরবরাহ’ বন্ধ, দাবি

বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসককে দেখিয়ে ফার্মেসিতে ভিটামিন বি ও ডি ট্যাবলেট নিতে যান রায়গঞ্জের মহারাজা এলাকার রামনাথ বর্মণ নামে এক বৃদ্ধ।

Advertisement
গৌর আচার্য 
শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৫ ০৮:৩২
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের মারনাইয়ের বছর ছাব্বিশের এক বধূ বেশ কিছুদিন ধরে রক্তক্ষরণের সমস্যায় ভুগছেন। ক’দিন আগে তিনি রায়গঞ্জ মেডিক্যালের বহির্বিভাগে স্ত্রীরোগ-বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসককে দেখান। চিকিৎসক তাঁকে অন্য ওষুধের পাশাপাশি ভিটাসিন-সি ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দেন। ওই বধূ বলেন, “মেডিক্যালের ফার্মেসিতে ভিটামিন সি ট্যাবলেট পাইনি। বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে।”

Advertisement

বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসককে দেখিয়ে ফার্মেসিতে ভিটামিন বি ও ডি ট্যাবলেট নিতে যান রায়গঞ্জের মহারাজা এলাকার রামনাথ বর্মণ নামে এক বৃদ্ধ। তিনি বলেন, “বেশ কিছু দিন ধরে শরীরিক দুর্বলতায় ভুগছি। জিভে ফুসকুড়ি ও ঘায়ের মতো হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন গাঁটে ব্যথা। চিকিৎসক আমাকে ভিটামিন বি ও ডি ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু, ফার্মেসিতে ওই দুই ওষুধ মেলেনি।”

অভিযোগ, শুধু রায়গঞ্জ মেডিক্যাল নয়, জেলার ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল, কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল-সহ জেলার ন’টি ব্লকের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মেসিতে বড়দের নানা ভিটামিনের ওষুধ মিলছে না। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ওই পরিস্থিতি চলছে। জেলার সমস্ত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিতে অবশ্য ছোটদের ভিটামিন ডি ড্রপ ও মাল্টি ভিটামিন ড্রপ ওষুধ পর্যাপ্ত রয়েছে। রায়গঞ্জ মেডিক্যালের কমিউনিটি মেডিসিনের চিকিৎসক বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভিটামিন ‘লাইফ সেভিং’ ওষুধ নয়। তবে, অনেক ক্ষেত্রে অন্য ওষুধের পরিপূরক বা পুষ্টির জন্য বিভিন্ন ভিটামিন ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সরকারি হাসপাতালে রোগীদের স্বার্থে সমস্ত ধরনের ভিটামিন ওষুধ কেনও থাকছে না, সেটাই স্পষ্ট নয়।”

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত বড়দের ভিটামিন এ, বি, বি ১, বি ৬, বি ১২, বি কমপ্লেক্স, সি, ডি, ই ও কে ওষুধ ও বিভিন্ন ভিটামিন ইঞ্জেকশন সরবরাহ করা হচ্ছে না। তাতেই জেলা জুড়ে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ওষুধের অভাব চরমে উঠেছে। গত কয়েকদিনে বেশিরভাগ হাসপাতালের ফার্মাসিতে বড়দের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ওষুধের ভাঁড়ার শূন্য। এ বিষয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যালের সিনিয়র ফার্মাসিস্ট বীরেন রায় মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসবের প্রক্রিয়ার পর প্রসূতিদের রক্তজমাটে সমস্যা হলে জরুরি ভিত্তিতে তাঁদের ভিটামিন কে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের পরে একই সমস্যায় সাধারণ রোগীদের ক্ষেত্রেও ওই ইঞ্জেকশন প্রযোজ্য। জেলার যে সমস্ত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামো রয়েছে, সেখানে ভিটামিন কে ইঞ্জেকশন মজুত রাখা হয়েছে। সমস্যার কথা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়েছে।”

Advertisement
আরও পড়ুন