WB Panchayat Election 2023

কংগ্রেস প্রার্থীর প্রচারে রাজ্যের প্রকল্পের ফিরিস্তি

২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে মনসুর কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে প্রথম বার বিন্দোল বুথ থেকে দাঁড়িয়ে জয়ী হন। এর পরে পঞ্চায়েতের উপ প্রধানেরও দায়িত্ব সামলান তিনি।

Advertisement
গৌর আচার্য 
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৩ ০৮:১১
প্রচারে কংগ্রেসের প্রার্থী মনসুর আলি। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

প্রচারে কংগ্রেসের প্রার্থী মনসুর আলি। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

এ যেনও উলটপুরাণ! গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থীর মুখে শোনা যাচ্ছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা। এমন ঘটনা উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিন্দোল বুথ এলাকায়। ওই বুথে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন প্রাক্তন সদস্য মনসুর আলি। গত পাঁচ বছরে মনসুর ওই বুথ এলাকার কত জন বাসিন্দাকে রাজ্য সরকারের কী-কী উন্নয়নমূলক প্রকল্পের পরিষেবা পাইয়ে দেওয়ার কাজে সহযোগিতা করেছেন, নির্বাচনী প্রচারে ভোটারদের সে ‘ফিরিস্তি’ শোনাচ্ছেন। যা শুনে জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক সমস্ত ‘জনমুখী’ প্রকল্পকে কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না। তাই বিরোধীরা ঘুরিয়ে হলেও রাজনৈতিক স্বার্থে ভোটের প্রচারে সে সব প্রকল্পকেই হাতিয়ার করতে বাধ্য হচ্ছেন।’’

২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে মনসুর কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে প্রথম বার বিন্দোল বুথ থেকে দাঁড়িয়ে জয়ী হন। এর পরে পঞ্চায়েতের উপ প্রধানেরও দায়িত্ব সামলান তিনি। রাজ্যে পালা বদলের পরে, মনসুর তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনসুরের স্ত্রী লায়লা খাতুন বিন্দোল বুথ থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে পঞ্চায়েতের প্রধানের পদে বসেন। কিন্তু দেড় বছরের মাথায় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে প্রশাসন লায়লাকে প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেয়। সেই থেকে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে মনসুরের। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল মনসুরকে প্রার্থী করেনি। এই পরিস্থিতিতে কিছু দিন আগে, তিনি ফের কংগ্রেসে ফেরেন। কংগ্রেস তাঁকে আবার ওই বুথ থেকেই প্রার্থী করে।

Advertisement

বর্তমানে বাড়ি-বাড়ি ভোটের প্রচারে গিয়ে মনসুর দাবি করছেন, গত পাঁচ বছরে তিনি ওই বুথ এলাকার ২৭৫ জন মহিলাকে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, ৫৮ জনকে বার্ধক্য ভাতা, ৩৪ জন বৃদ্ধাকে বিধবা ভাতার মতো পরিষেবা পাইয়ে দেওয়ার কাজে সহযোগিতা করেছেন। কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে এই প্রচারে অন্যায়ের কিছু দেখছেন না মনসুর। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের করের টাকায় রাজ্য সরকার রাজ্যের মানুষের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালাচ্ছেন। এই টাকা তৃণমূলের নয়। বিন্দোল বুথে সাধারণ মানুষকে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কাজে আমি যতটা পেরেছি সহযোগিতা করেছি। সে কথাই প্রচারে বলছি।’’

কানাইয়ার পাল্টা দাবি, রাজ্য সরকারে উন্নয়নমূলক প্রকল্প সকলের জন্য। বিরোধীরাও তা জানেন। কিন্তু অন্য সময় অহেতুক সমালোচনা করেন। আর ভোটে তা নিয়ে প্রচার করেন। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এর মধ্যে বিতর্কের কিছু নেই। মনসুর তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের মধ্যে লড়াই করে দল ছেড়েছেন। তিনি রাজ্য সরকারের প্রকল্প নিয়ে কথা বলছেন, কোনও দলের প্রকল্প নিয়ে নয়।’’

আরও পড়ুন
Advertisement