Water Crisis in Siliguri

সঙ্কটের সুযোগে চলছে জল বিক্রির দেদার অবৈধ কারবার 

শিলিগুড়ির তিলক রোডে এবং গোপাল মোড়ে একটি পরিস্রুত জল বিক্রির ব্যবসায়ী জয়ন্ত বিশ্বাস। তাঁরা দোকান থেকে জারের জল ৩০ টাকা করে বিক্রি করছেন। পাঁচ লিটার জল ২০ টাকায় বিক্রি করছেন। জার নিয়ে গেলে ভরে দিচ্ছেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৪ ০৯:০০
জামা-কাপড়ের দোকানে বিকোচ্ছে পানীয় জল। শিলিগুড়ির বিধান রোডে।

জামা-কাপড়ের দোকানে বিকোচ্ছে পানীয় জল। শিলিগুড়ির বিধান রোডে। ছবি: স্বরূপ সরকার।

শহরে জলসঙ্কটে পরিস্রুত জল বিক্রির কারবারের রমারমা শিলিগুড়িতে। অভিযোগ, মাসের লাভ চার দিনেই তুলে নিচ্ছেন জল ব্যবসায়ীদের একাংশ। অনেক ক্ষেত্রে বেশি দামে জলের জার বিক্রি চলছে। তবে জলের করাবারিরা তা স্বীকার করতে নারাজ। এমনকি, বৈধ লাইসেন্স ছাড়াও, অনেকে কারবার করছেন বলে জল কারবারিদেরই একাংশের দাবি। শিলিগুড়ি শহরে এ ধরনের জল পরিস্রুত করে বিক্রির কারবার করেন অন্তত ৩৫ জন ব্যবসায়ী। তার মধ্যে হাতে গোনা জনা তিনেকের কাছে ভূগর্ভস্থ জল তোলার প্রয়োজনীয় লাইসেন্স রয়েছে। জনা আটেক আবেদন করে সরকারি ফি জমা করেছেন। অনুমতি এখনও পাননি। বাকি কারও সেই বৈধতা নেই বলে জানা যাচ্ছে।

Advertisement

ডাবগ্রামে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত এ ধরনের জল বিক্রির কারখানার মালিক শঙ্কর মণ্ডল। তাঁর সমস্ত বৈধ লাইসেন্স রয়েছে বলে নথিও দেখালেন। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণত দৈনিক বিক্রি ৭০ জার জল। ২০ টাকা করে বিক্রি করছি। বাড়িতে পৌঁছে দিলে ৩০ টাকা। জার নতুন নিলে ১৫০ টাকা অতিরিক্ত তার জন্য। পুরসভার জলে সমস্যা হচ্ছে। তাই মানুষের পাশে থাকা আমাদেরও কর্তব্য। অথচ, অনেকে বেশি দামে জার বিক্রি করছে। আমরা একেবারেই তা করছি না।’’ তিনি জানান, গত তিন দিন ধরে বাড়িতে জল নিতে লোকের লাইন লেগেই রয়েছে রাত পর্যন্ত।

শিলিগুড়ির তিলক রোডে এবং গোপাল মোড়ে একটি পরিস্রুত জল বিক্রির ব্যবসায়ী জয়ন্ত বিশ্বাস। তাঁরা দোকান থেকে জারের জল ৩০ টাকা করে বিক্রি করছেন। পাঁচ লিটার জল ২০ টাকায় বিক্রি করছেন। জার নিয়ে গেলে ভরে দিচ্ছেন। কুয়োর জল পাম্প করে তুলে পরিস্রুত করে জারবন্দি করছেন। অন্য সময় দৈনিক তার ১০০ জার জল বিক্রি হয়। এখন প্রতিদিন ৪০০ বেশি জারবন্দি জল বিক্রি হচ্ছে। তিলক রোডে একটি কাপড়ের দোকান বিক্রেতাও এই সুযোগে দোকানের সামনে জারবন্দি জল রেখে বিক্রি শুরু করেছেন। তবে তিনিও ৩০ টাকা জার হিসাবে জল বিক্রি করছেন বলে দাবি করেন।

তবে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অনেকে ৬০, ৭০ টাকা করেও জারের জল কিনছেন। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কপিল দাসের অভিযোগ, তিনি ৭০ টাকা দিয়ে জারের জল কিনেছেন এক দিন আগে। উপায় নেই বলে কিনতে হয়েছে। ‘নর্থ বেঙ্গল ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক মহানন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের কাছেও অভিযোগ এসেছে, অনেকেই ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে জারের জল বিক্রি করছেন। আমরাও এর প্রতিবাদ করছি। পুরসভার তরফে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’ তিনি জানান, এই পরিস্থিতিতে ২৫ টাকার জারের জল তাঁরা ২০ টাকায় বিক্রি করছেন। তাঁর কারখানায় রাত ১২টা পর্যন্ত শুক্রবার বাসিন্দারা জল কিনেছেন বলে জানান। মহানন্দর দাবি, ‘‘এটা ঠিক জল তোলার বৈধ লাইসেন্স অনেকেরই নেই। পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই অনেকে এই কারবার করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement