Bangladesh Situation

বাংলাদেশি পর্যটকদের থাকতে দেওয়া হবে না দার্জিলিঙের হোটেলে! সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ী সমিতির

‘স্টুডেন্ট’ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত ভিসা দেখিয়েও দার্জিলিঙের কোনও হোটেলে জায়গা পাবেন না বাংলাদেশের কোনও নাগরিক। ঘোষণা করলেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:২৪
Darjeeling

শীতের মরসুমে দার্জিলিঙে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। —ফাইল চিত্র।

দার্জিলিঙের কোনও হোটেলে আর বাংলাদেশি পর্যটকদের জায়গা হবে না। সোমবার এমনই সিদ্ধান্তের কথা জানাল পাহাড়ের হোটেল ব্যবসায়ীদের সংগঠন। তাঁদের বক্তব্য, ‘ব্যবসার ক্ষতি হোক, আপত্তি নেই। কিন্তু বাংলাদেশিদের কোনও জায়গা হবে না।’ প্রতিবেশী দেশে উদ্ভুত পরিস্থিতি এবং ভারতের প্রতি বিভিন্ন ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এই অবস্থান নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

পাহাড়ের হোটেলে বাংলাদেশি পর্যটকদের বয়কট করার জল্পনা চলছিল কয়েক দিন ধরে। বিভিন্ন সংগঠন এবং হোটেল ব্যবসায়ী সম্মিলিত ভাবে এই বয়কটের কথা ঘোষণা করলেন। ‘গ্রেটার শিলিগুড়ি হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে সোমবার বলা হয়, দার্জিলিং পুলিশ জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন হোটেল এবং তার বাইরেও যে সমস্ত হোটেল রয়েছে তাদের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিয়ে ভোটাভুটি হয়েছে। সেখানে প্রায় ৯৭ শতাংশ ভোট গিয়ে পড়ে বাংলাদেশি পর্যটকদের বিরুদ্ধে। তাই এই সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে।

শীতের মরসুমে পাহাড়ে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছরই এই সময় গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার বাংলাদেশি পর্যটক শৈলশহরে বেড়াতে আসেন। তাঁদের ‘বয়কট’ করার সিদ্ধান্ত কঠিন বলে মেনে নিয়েও ব্যবসায়ী সংগঠন বলছে, ‘‘দেশের থেকে বড় কিছুই নয়।’’ সাংবাদিক বৈঠকে ‘গ্রেটার শিলিগুড়ি হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘‘বিভিন্ন সংগঠন স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। কিন্তু সেটা বড় কথা নয়। যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে গেলে কিছু নিয়ম মানতে হয়। সেই নিয়ম অনুযায়ী ভোটপ্রক্রিয়া হয়েছিল। তাতে প্রায় ৯৭ শতাংশ ভোট বাংলাদেশিদের বিপক্ষে পড়েছে।’’ সেই কারণে বাংলাদেশের পর্যটককে আপাতত হোটেলে জায়গা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উজ্জ্বল। তিনি জানান, এই সিদ্ধান্ত যেন সবাই মেনে চলেন। মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণও করা হবে। এমনকি, ‘স্টুডেন্ট’ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত ভিসা দেখিয়েও দার্জিলিঙের কোনও হোটেলে বাংলাদেশের কোনও নাগরিক জায়গা পাবেন না।

পর্যটনের মরসুমে এই সিদ্ধান্তে ব্যবসায় বড় ক্ষতি হবে, সেটা মেনে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তার পরেও অবস্থানে তাঁরা অনড় থাকবেন বলে জানিয়েছেন। হোটেল সংগঠনের সম্পাদক উজ্জ্বলের কথায়, ‘‘ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং ভারতের প্রতি কটূক্তির জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যত দিন না ওই ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ দুঃখপ্রকাশ এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করে বিবৃতি দেবে, তত দিন ওই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’’ একই সুর শোনা গিয়েছে ‘ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর’-এর সদস্য দেবাশিস মৈত্রের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে আগে দেশ। ব্যবসার ক্ষতি হবে, হোক। হোটেল সংগঠন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সঠিক।’’

Advertisement
আরও পড়ুন