Elephant Attack

ঘরে চার বার হানা হাতির, মৃত্যু বৃদ্ধার

খবর পেয়ে রাতেই সেখানে পৌঁছে হাতিটিকে তাড়িয়ে জঙ্গলে ফেরত পাঠান বনকর্মীরা। মৃতদেহ উদ্ধার করে সোমবার ময়না-তদন্তে পাঠায় জয়গাঁ থানার পুলিশ।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
জয়গাঁ শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৪০
হাতির হানায় ভাঙা ঘর। সোমবার দলসিংপাড়া চা বাগানে।

হাতির হানায় ভাঙা ঘর। সোমবার দলসিংপাড়া চা বাগানে। নিজস্ব চিত্র।

বাড়িতে হাতি হানা দিলেও, আগের তিন বার বেঁচে গিয়েছেন। রবিবার গভীর রাতে সে সুযোগ পেলেন না কমলি তামাং। আলিপুরদুয়ারের কালচিনির দলসিংপাড়া চা বাগানের ডিগবির লাইন এলাকায় ঘরে হামলা চালিয়ে, বছর সত্তরের ওই মূক-বধির বৃদ্ধাকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে মাটিতে আছাড় মারে হাতি। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। হস্তী-বিশেষজ্ঞ পার্বতী বড়ুয়া বলেন, ‘‘নানা কারণে একই জায়গায় বার বার হাতি হানা দিতে পারে। সরেজমিনে তদন্ত না করে কিছুই বলা সম্ভব নয়।’’ তবে বন দফতর সূত্রে খবর, কমলি এবং ওই এলাকার কয়েক জনের বাড়ি ‘হাতি করিডর’-এর মধ্যে পড়ে।

Advertisement

একাই টিনের ঘরে থাকতেন কমলি। পাশেই তাঁর ভাইয়ের বাড়ি। রবিবার রাতে বসতিতে হাতি ঢুকেছে টের পেলেও, বাইরে বেরনোর সাহস পাননি বাসিন্দারা। সে সব ঘরের আশপাশেও ভাঙচুর চালায় হাতিটি। এলাকার বাসিন্দারা জানান, এর আগে গত কয়েক বছরে আরও তিন বার কমলির বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল বুনো হাতি। তবে প্রতি বারই কোনও ভাবে বেঁচে যান কমলি। এ বার আর পারলেন না।

খবর পেয়ে রাতেই সেখানে পৌঁছে হাতিটিকে তাড়িয়ে জঙ্গলে ফেরত পাঠান বনকর্মীরা। মৃতদেহ উদ্ধার করে সোমবার ময়না-তদন্তে পাঠায় জয়গাঁ থানার পুলিশ। এ নিয়ে বন দফতরকে নিশানা করেছেন দলসিংপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দিলীপ থাপা। তাঁর অভিযোগ, বনকর্মীরা এলাকায় যথাযথ ভাবে টহল দেন না। অনেক সময় ডাকলেও, তাঁরা সময় মতো পৌঁছন না। তবে অভিযোগ মানতে নারাজ বন দফতর।

একই বাড়িতে পরপর কেন হামলা চালাল হাতি? এলাকার এক দিকে জলদাপাড়া ও অন্য দিকে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল। মাঝেমধ্যেই সেখান দিয়ে যাতায়াত করে হাতির পাল। বন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘রবিবার রাতে যেখানে হাতি হানা দিয়েছিল, সে এলাকা হাতি করিডর হলেও জমি বন দফতরের নয়। তাই সেখানকার বাসিন্দাদের অন্য কোনও জায়গায় স্থানান্তর করার কোনও পরিকল্পনা দফতরের নেই।’’

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপ-ক্ষেত্র অধিকর্তা হরি কৃষ্ণন বলেন, ‘‘দলসিংপাড়া চা বাগানের পাশে রয়েছে ভার্নাবাড়ি চা বাগান। সেখানে একটি নিকাশি নালা তৈরি করা হয়েছে। অনেক সময় হাতি সে নালাটি পার না করে এক দিক থেকে অন্য দিকে যেতে আশপাশের এলাকায় ঢুকে পড়ছে।’’ তিনি জানান, ইতিমধ্যে এই বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ওই নিকাশি নালার উপরে কালভার্ট তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। তাতে লোকালয়ে হাতির আনাগোনা অনেকটাই কমতে পারে। কালভার্ট তৈরি হলে, কোনও হাতি বা হাতির দল বাগানের মধ্যে দিয়েই জঙ্গলে ফিরে যেতে পারবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement