ময়না তদন্ত ‘জটিল’ বলে মনে হলে, চিকিৎসকেরা ঝুঁকি নিচ্ছেন না। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল ও গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। তার উপরে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ ছাড়াই কোনও রকমে চলছে ময়না তদন্তের কাজ। গঙ্গারামপুরে দেহ কিছুক্ষণের জন্য রাখার ব্যবস্থা থাকলেও, মর্গ নেই। জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কোনও দেহ বালুরঘাটে আনতে হচ্ছে। পরে তার ময়না তদন্ত ‘জটিল’ বলে মনে হলে, চিকিৎসকেরা ঝুঁকি নিচ্ছেন না। দেহ ফের নিয়ে যেতে হচ্ছে ১১০ কিলোমিটার দূরের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এতে মৃতদের পরিজনেরা চরম দুর্ভোগ ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ।
পরিস্থিতির দায় কেন্দ্রীয় সরকারের উপরে চাপিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের পাল্টা দাবি, ন্যূনতম বুনিয়াদি পরিষেবা রাজ্য সরকারেরই দেওয়া উচিত। রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের অনেক টাকা বাকি রয়েছে। জেলার সাংসদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এ নিয়ে তদ্বির করলে টাকা চলে আসত।’’ টাকা এলে ওই কাজগুলি করা যায় বলে চন্দ্রিমা দাবি করেন। সুকান্ত পাল্টা বলেন, ‘‘রাজ্যের হাসপাতালের চিকিৎসকদের বেতন কেন্দ্রীয় তহবিলে হয় না। হাসপাতালে বাড়তি চিকিৎসক দিতে কেন্দ্রের সাহায্য শুনলে, মানুষ হাসবে।’’ স্বাস্থ্য মিশনের শর্ত রাজ্য মানেনি বলেই টাকা পাচ্ছে না, দাবি তাঁর। রাজনৈতিক চাপান-উতোর বাদ দিয়ে পরিষেবা এবং চিকিৎসকের অভাব সংক্রান্ত সমস্যা মেটানোর দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। তিন বছর ধরে বালুরঘাট হাসপাতালে শুধু ফরেন্সিক চিকিৎসকই নন, নেই একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। হাসপাতালের সাধারণ ডাক্তারদের করা ময়না তদন্তের রিপোর্ট নিয়ে মৃতের আত্মীয়দের একাংশের সন্দেহ তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রে তা মামলায় প্রভাব পড়ছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। বালুরঘাট হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দুবিকাশ বাগ বলেন, ‘‘ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ না থাকায় ময়না তদন্ত (পিএম) নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস বলেন, ‘‘সমস্যার বিষয়টি রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা জানেন।’’ চিকিৎসক চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।