BJP panchayat head

সদস্যা বিজেপির, ‘অপহৃত’ পূর্ণিমা তৃণমূলের ভোটে প্রধান নির্বাচিত

তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রধান পদ না পেলে, তৃণমূলে যোগ দিতে বেঁকে বসেছিলেন পূর্ণিমা রায়। সে কারণেই তাঁকে সরকারি ভাবে দলে না নিয়েই প্রধান করা হয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৩ ০৮:২৫
বোর্ড গঠনের পর বেলাকোবা গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসছেন তৃণমূলের ভোটে নির্বাচিত প্রধান পূর্ণিমা রায়।

বোর্ড গঠনের পর বেলাকোবা গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসছেন তৃণমূলের ভোটে নির্বাচিত প্রধান পূর্ণিমা রায়। ছবি: সন্দীপ পাল

বিজেপির ‘অপহৃত’ জয়ী সদস্যাকে প্রধান করে বোর্ড দখল করল তৃণমূল। এক জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যা পূর্ণিমা রায়কে তৃণমূল অপহরণ করেছে অভিযোগ করে বিজেপি জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল। পূর্ণিমা রায়ের ছেলে রাহুল মা-বাবাকে আটকে রাখা হয়েছে বলে প্রথমে থানায়, পরে হাই কোর্টে মামলা করেছিল। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির বেলাকোবা গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের সভায় সেই পূর্ণিমা রায়ের নামই প্রধান পদে প্রস্তাব করলেন তৃণমূল সদস্যেরা। দুই নির্দল এবং বিজেপি থেকে জয়ী পূর্ণিমা রায়ের ভোট-সহ মোট পনেরোটি ভোট পেয়ে বেলাকোবায় বোর্ড গঠন করল তৃণমূল। যদিও সরকারি খাতায় প্রধান নির্বাচিত পূর্ণিমা রায়ের নামের পাশে দলের নামে লেখা হল বিজেপি। কারণ, সরকারি ভাবে পূর্ণিমা রায় এখনও তৃণমূলে যোগ দেননি।

Advertisement

২৯ সদস্যের বেলাকোবা গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৫টি আসনে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল বিজেপি। গত ৩০ জুলাই তৃণমূলের এসসি-এসটি সেলের সভাপতি কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে পূর্ণিমা রায় এবং দুই নির্দল সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ করে তারা। পুলিশে অভিযোগ করেও কোনও কাজ হচ্ছে না দাবি করে পূর্ণিমা রায়ের ছেলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন। গত মঙ্গলবার সে মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ পরদিনই পূর্ণিমা রায়কে আদালতে হাজির করাতে নির্দেশ দেয়। বুধবার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেই গাড়ি করে সার্কিট বেঞ্চে এসে পূর্ণিমা রায় দাবি করেন, তিনি স্বেচ্ছায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন, কেউ তাঁকে অপহরণ করেনি। এ দিন সেই পূর্ণিমা রায়কেই প্রধান পদে ভোট দিল তৃণমূল। বেলাকোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন তৃণমূলের এসসি-এসটি সেলের সভাপতি কৃষ্ণ দাস।

বোর্ড গঠনের পরে, কৃষ্ণ মিষ্টিমুখ করালেন পূর্ণিমা রায়কে। সদ্য প্রধান নির্বাচিত পূর্ণিমা রায়কে সংবদামাধ্যম প্রশ্ন করে, “আপনি বিজেপির না তৃণমূলের প্রধান হলেন?” উত্তরে চুপ করে থাকেন পূর্ণিমা। পাশ থেকে তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ বলে দেন, “উনি বেলাকোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান।” সংবাদমাধ্যম প্রশ্ন করে, “কোন দলের সদস্যরা আপনাকে ভোট দিয়ে প্রধান নির্বাচিত করলেন?” পূর্ণিমা ফের চুপ। কৃষ্ণ বলেন, “বেলাকোবার পঞ্চায়েত সদস্যেরা ওঁকে ভোট দিয়ে প্রধান নির্বাচিত করেছেন।”

তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রধান পদ না পেলে, তৃণমূলে যোগ দিতে বেঁকে বসেছিলেন পূর্ণিমা রায়। সে কারণেই তাঁকে সরকারি ভাবে দলে না নিয়েই প্রধান করা হয়েছে। বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল রায়ের টিপ্পনী, “এত জোরাজোরি করেও, তৃণমূল কাউকে বিশ্বাস করছে না। প্রধান নির্বাচনের ভোট ওদের কোনও সদস্যকে আলাদা করে দিতে দেওয়া হয়নি। এক জন সদস্যই সকলের হয়ে ভোট দিয়ে দেন।”

পূর্ণিমা রায়কে অপহরণের অভিযোগ তুলে থানা-আদালতে যাওয়া ছেলে রাহুল রায়কে এ দিন বোর্ড গঠনের পরে দেখা যায়নি। বিজেপির অভিযোগ ছিল, রাহুলকেও তৃণমূল অপহরণ করেছে। রাহুলকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পূর্ণিমা রায়ের কাছে জানতে চাওয়া হয় রাহুল কোথায়? পূর্ণিমার উত্তর, “ও বাড়িতে আছে। ওর পেটে ব্যথা।” বোর্ড গঠনের পরে, কৃষ্ণ দাস শতাধিক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে পূর্ণিমা রায়কে বাড়িতে পৌঁছে দেন। বাড়ি ফিরে পড়শিদের বলেন, “আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম।”

আরও পড়ুন
Advertisement