Siliguri Tea Auction Centre

চা নিলামে ‘ভারত’ ব্যবস্থার বদলে ‘ইংলিশ’ পদ্ধতি ফেরানোর আর্জি

‘ভারত অকশন’ পদ্ধতি ব্যবস্থায় একটি নিলামে দীর্ঘ ক্ষণ দর কষাকষি হয় না। কম্পিউটারের মাধ্যমে অনেকটা ‘টেন্ডার’-এর দরপত্র খোলার মতো প্রথমে যিনি সর্বোচ্চ দর হাঁকেন, তাঁকেই চা বিক্রি করা হয়।

Advertisement
অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৪১
An image of Tea Auction Centre

শিলিগুড়ির চা নিলাম কেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র।

দেশের নাম থেকে ‘ইন্ডিয়া’ মুছে ‘ভারত’ করা হবে কি না, সে জল্পনার মধ্যেই চা শিল্পে ‘ইংলিশ’-আর্জি। ‘ভারত অকশন’ ব্যবস্থা নয়, চা নিলামে পুরনো ‘ইংলিশ’ বন্দোবস্তই ফেরানো হোক— এমনই আর্জি চা পর্ষদকে জানাল চা বাগান পরিচালকদের সম্মিলিত মঞ্চ।

Advertisement

চা বাগান পরিচালকদের ছ’টি সংগঠনের সম্মিলিত উপদেষ্টা সংস্থা ‘কনসালটেটিভ কমিটি অব প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (সিসিপিএ)-এর তরফে গত ১৪ সেপ্টেম্বর লেখা চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, নতুন ‘ভারত অকশন’ ব্যবস্থা চালু করার পরে, চায়ের দাম কমতে শুরু করেছে। নতুন ব্যবস্থায় এক-একটি নিলামে গড়ে কেজি প্রতি ২০ টাকা অবধি কমে যাচ্ছে চায়ের দাম। তাই আর্জি— ‘ভারত অকশন’ নয়, ফিরিয়ে দেওয়া হোক ‘ইংলিশ’ ব্যবস্থা। এই আবেদন জানানো হয়েছে এমন একটি আবহে, যখন কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে দেশের নাম পরিবর্তন নিয়ে বিতর্ক ধেয়ে আসছে। দেশের নাম থেকে ‘ইন্ডিয়া’ মুছে শুধু ‘ভারত’ করা হতে চলেছে কি না, তা নিয়ে চলছে জল্পনা। এমন বিতর্কের মধ্যেই গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি পুরনো ব্যবস্থা তুলে দিয়ে চা নিলামে ‘ভারত অকশন’ ব্যবস্থা চালু করেছে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীন টি বোর্ড তথা চা পর্ষদ। নতুন ব্যবস্থায় ছ’মাস যেতে না যেতেই চা বাগান পরিচালকেরা দাবি তুলেছেন, ‘ভারত’ নয়, ‘ইংলিশ’ই থাক।

‘ভারত অকশন’ পদ্ধতি ব্যবস্থায় একটি নিলামে দীর্ঘ ক্ষণ দর কষাকষি হয় না। কম্পিউটারের মাধ্যমে অনেকটা ‘টেন্ডার’-এর দরপত্র খোলার মতো প্রথমে যিনি সর্বোচ্চ দর হাঁকেন, তাঁকেই চা বিক্রি করা হয়। এই পদ্ধতিতে ন্যূনতম ৩০ ব্যাগ (২৬-৫০ কেজি) চা নিলাম থেকে কিনতে হবে বলে বেঁধে দেওয়াও হয়েছে। এর ফলে, ছোট এবং মাঝারি ক্রেতারা সঙ্গতির অভাবে নিলামে যোগ দিতে পারছেন না বলে দাবি। ক্রেতা কমে যাওয়ায়, দামও কমছে। ‘ইংলিশ’ ব্যবস্থা সাধারণ নিলামের মতো। সেখানে চায়ের নমুনা দেখিয়ে, সর্বোচ্চ দর না পাওয়া পর্যন্ত নিলাম চলে। সেখানে ন্যূনতম ২০ ব্যাগ কিনতে হয়।

সিসিপিএ-র চেয়ারম্যান অতুল আস্থানা চিঠিতে লিখেছেন— ‘ভারত অকশন পদ্ধতি চালু হওয়ার পরে, চায়ের দাম কমে যাচ্ছে। তার ফলে, শিল্পে টাকার জোগান কমছে। পুজোর আগে যখন বোনাস দিতে হবে, তখন অর্থের জোগান কমে যাচ্ছে চা শিল্পে। আমাদের আর্জি, পুরনো ইংলিশ ব্যবস্থাই চালু রাখা হোক’।

এর আগে যে পদ্ধতিতে চা নিলাম হত, তা ‘ইংলিশ’ ব্যবস্থা বলে প্রচলিত। চা পর্ষদের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘এটি নীতিগত সিদ্ধান্ত। বাণিজ্য মন্ত্রক থেকে নেওয়া হয়। চা পরিচালকদের দাবি সেখানেই জানানো হয়েছে।’’

সূত্রের খবর, গত কয়েকটি নিলামে শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রে চায়ের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে কমেছে। শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রের তরফে মহেন্দ্র বনশল বলেন, ‘‘নতুন নিলাম ব্যবস্থার পরিবর্তে পুরনো নিলাম পদ্ধতি ফিরে আসুক, সে দাবি আমাদেরও।’’ ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নিলামে যদি বেশি ক্রেতা যোগ দিতে না পারেন, তা হলে চায়ে অর্থের জোগানই আসবে না।’’ চা পর্ষদের সদস্য পুরজিৎ বক্সীগুপ্ত বলেন, ‘‘ভারত অকশনে সমস্যা হচ্ছে। পর্ষদের বৈঠকে আমরাও জানাব।’’

আরও পড়ুন
Advertisement