নিশীথ প্রামাণিক (বাঁ-দিকে) এবং শান্তনু ঠাকুর। —ফাইল চিত্র।
সব ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রিসভার বহু প্রতীক্ষিত রদবদল ও সম্প্রসারণ হতে চলেছে। প্রায় ২০ জনের কাছাকাছি নতুন মন্ত্রী শপথ নিতে পারেন বলে সরকারি সূত্রের খবর। জল্পনা রয়েছে, সেই তালিকায় জায়গা পেতে পারেন বাংলার দুই সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ও শান্তনু ঠাকুরও। সম্প্রতি অসম, উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বদল হয়েছে। দুই রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও তীরথ সিংহ রাওয়তকে মন্ত্রিসভায় আনা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে তাঁদের রাজ্যসভায় জিতিয়ে আনা হবে। বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী ইতিমধ্যেই রাজ্যসভায় জিতে এসেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারে তাঁর অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা হবে।
গত দু’সপ্তাহ ধরেই মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে জল্পনা চলছে। বিজেপির নেতারাও শপথগ্রহণের ডাক পাবার আশায় উন্মুখ হয়ে রয়েছেন। বিজেপি সূত্র বলছে, বুধ বা বৃহস্পতিবারই নতুন মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ হতে পারে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার, একটি বৈঠক হওয়ার কথা বলে বিজেপি সূত্রে খবর। মূলত উত্তরপ্রদেশের মতো ভোটমুখী রাজ্যগুলির জাতপাতের সমীকরণ মাথায় রেখেই নতুন মুখ বাছাই হবে। উত্তরপ্রদেশ থেকে তিন থেকে চার জন নতুন মন্ত্রী হতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলছে।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ও শান্তনু ঠাকুরের মন্ত্রিসভায় ঢোকার সম্ভাবনা প্রবল বলে বিজেপি নেতাদের মত। গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে বিজেপি ভাল ফল করেছে। তার স্বীকৃতি হিসেবেই কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ মন্ত্রিসভায় জায়গা পেতে পারেন। নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিধিনিয়ম এখনও চালু হয়নি বলে মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। তা নিরসন করতে শান্তনুকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হতে পারে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ও মন্ত্রী পরিষদে মোট ৮১ জন সদস্য থাকতে পারেন। এখন প্রধানমন্ত্রী ছাড়া মন্ত্রিসভায় ২১ জন পূর্ণমন্ত্রী, ৯ জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ও ২৩ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। ফলে আরও ২৮ জন নতুন মন্ত্রীর যোগদান সম্ভব। পীযূষ গয়াল, প্রকাশ জাভড়েকর, হরদীপ সিংহ পুরী, নিতিন গডকড়ী, হর্ষ বর্ধন, নরেন্দ্র সিংহ তোমর, স্মৃতি ইরানি, রবিশঙ্কর প্রসাদ, ধর্মেন্দ্র প্রধানদের হাতে এখন একাধিক মন্ত্রক রয়েছে। নতুন মুখ এনে তাঁদের ভার লাঘব করা হতে পারে।
সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভায় তরুণ মুখ হিসেবে লাদাখের সাংসদ জামিয়াং সেরিং নামগিয়ালকে দেখা যেতে পারে। শরিক দলের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের আপনা দলের অনুপ্রিয়া পটেল, জেডিইউ-এর দুই সাংসদকে দেখা যেতে পারে। রামবিলাস পাসোয়ানের শূন্য স্থানে এলজেপি থেকে কে আসবেন, পুত্র চিরাগ না কি ভাই পশুপতি পরস, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। মধ্যপ্রদেশ থেকে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ছাড়াও রাকেশ সিংহ মন্ত্রিসভায় জায়গা পেতে পারেন। মহারাষ্ট্র থেকে নারায়ণ রাণে, হিনা গাভিটের নামও জল্পনায় রয়েছে। দিল্লির সাংসদ মীনাক্ষি লেখি মন্ত্রিসভায় গুরুদায়িত্ব পেতে পারেন বলে বিজেপি নেতারা মনে করছেন। থাওয়র চাঁদ গহলৌতের মতো কোনও প্রবীণ মন্ত্রী বাদ পড়বেন কি না, তা নিয়েও জল্পনা চলছে।