Kanchanjunga Express Accident

রেলগেটে বসানো হবে নয়া যন্ত্র, রেকর্ড হবে কথাও! কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনার পর সিদ্ধান্ত উত্তর-পূর্ব রেলের

সোমবারের রেল দুর্ঘটনার দায় কার, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। ঘটনার তদন্ত করছেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য সুরক্ষা কমিশনার। প্রায় প্রতি দিনই দুর্ঘটনা সংক্রান্ত কোনও না কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসছে।

Advertisement
পার্থপ্রতিম দাস
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৪ ২১:৪৭
New instrument install in rail gate on Kanchenjunga train tragedy row

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পর থেকেই একাধিক প্রশ্নে বিদ্ধ রেল। উঠেছে যাত্রী সুরক্ষার নিয়েও প্রশ্ন। এই আবহে রেলগেটে নতুন যন্ত্র বসাতে চলেছে রেল। সূত্রের খবর, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল বিভিন্ন রেলগেটে এই যন্ত্র বসাবে। এর ফলে গেটম্যানের সঙ্গে স্টেশনমাস্টারের কথোপকথন রেকর্ড করা থাকবে।

Advertisement

গত সোমবারের রেল দুর্ঘটনার দায় কার, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। ঘটনার তদন্ত করছেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য সুরক্ষা কমিশনার। প্রায় প্রতি দিনই এই দুর্ঘটনা সংক্রান্ত কোনও না কোনও নতুন তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। ঘটনার দিন ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে কমিশনার একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এক জনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখছে অন্য জনের বয়ান। অসঙ্গতি পেলে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

কমিশনার ইতিমধ্যেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালক, গার্ড, রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশনমাস্টার, গেটম্যান-সহ একাধিক ব্যক্তিকে ডেকে পাঠিয়ে জেরা করেছেন। এখনও পর্যন্ত তদন্তে উঠে আসা তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার দিন ভোর থেকেই অকেজো ছিল রাঙাপানি এবং চটেরহাটের মাঝের স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা। যার ফলে ট্রেন পরিষেবা চলছিল মূলত ‘কাগুজে অনুমতি’র ভিত্তিতেই।

রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশনমাস্টারের দেওয়া ওই কাগুজে অনুমতি নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন চালক। সেই একই অনুমতি পেয়েছিলেন মালগাড়ির চালকও। রেলকর্মীদের একাংশের দাবি, কাগুজে সিগন্যাল পেয়েও বেশি গতিতে চলছিল মালগাড়ি। এই গতির কথা নাকি রাঙাপানির স্টেশনমাস্টারকে জানানো হয়েছিল। রাঙাপানি স্টেশন ছাড়িয়ে যে রেলগেট পড়ে তার গেটম্যান টেলিফোনে (হটলাইন) স্টেশনমাস্টারকে খবর দেন। এমনই কথা বলছেন কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার।

কিন্তু গেটম্যান এবং স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল, কখন জানানো হয়, তা তদন্তের স্বার্থে স্পষ্ট করে এখনই কিছু জানাচ্ছে না রেল। তবে ওই গেটম্যান সত্যি কথা বলছেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রেলকর্মীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, ওই রেলগেটের গুমটিতে থাকা টেলিফোনে রেকর্ড করা কথোপকথন খতিয়ে দেখলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এ বিষয় নিয়ে উত্তর-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘‘কমিশনের তদন্ত চলাকানীন কিছু বলা সম্ভব নয়। আর এ বিষয় নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাইছি না৷’’

উল্লেখ্য, বিভিন্ন রেলগেটের গুমটি থাকা টেলফোনের সঙ্গে একটি বিশেষ যন্ত্র লাগানো থাকে। রেল সুত্রে খবর, এই যন্ত্রের মাধ্যমে টেলিফোন ‘স্টেবেলাইজেশন’ হবে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কোনও সমস্যার জন্য আর ওই টেলিফোন পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হবে না। এ ছাড়াও গেটম্যানের সঙ্গে স্টেশনমাস্টারের কথোপকথনও রেকর্ড থাকবে। এই যন্ত্র বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন-সহ রেলগেটে থাকলেও সমস্ত রেলগেটে এই যন্ত্র নেই বলেই খবর। সূত্রের খবর, এই যন্ত্রই এখন রেলগেটগুলিতে বসানো হচ্ছে। এর ফলে আগামীতে কোনও সমস্যা হলে সেই যন্ত্রের মাধ্যমে সব তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছে রেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement