Paschimbanga Divas

ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎকে শোকজ় কেন? নতুন বিতর্ক তৈরি হতেই দূরত্ব রচনা শুভেন্দুর

ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল বিক্ষোভের মুখে পড়ার ঘটনায় তোলপাড় পদ্মশিবির। বিক্ষোভে ইন্ধনের দায় চাপিয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ওই আসনের প্রার্থী অভিজিৎ দাসের বিরুদ্ধে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৪ ১৭:৪৫
New debate in BJP after show cause letter against Abhijit Das

শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

ডায়মন্ড হারবারে পরাজিত বিজেপি প্রার্থীকে রাজ্য বিজেপির পক্ষে শোকজ় চিঠি দেওয়া হয়েছে বুধবার। তার পর থেকে বিজেপির ভিতরেই নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে। অভিজিৎ দাস (ববি)-কে শোকজ় করে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সাময়িক ভাবে তাঁকে বরখাস্তও করা হয়েছে। তার পরেই ববির পক্ষে অন্য অভিযোগ তোলা হয়। ববি বিভিন্ন মহলে দাবি করেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে তিনি ডায়মন্ড হারবার আসনে ভোটে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে যখন আদালতে যাওয়ার তোড়জোড় করছেন, তখনই তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ববি দাবি করেন, এর পিছনে চক্রান্ত আছে। এর পরে বৃহস্পতিবার এই বিতর্ক থেকে দূরত্ব তৈরি করলেন শুভেন্দু। ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের অনুষ্ঠানের পরে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেন, দু’টি পৃথক বিষয়। আদালতে যাওয়ার নির্দেশ এবং শোকজ়ের চিঠির মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই।

Advertisement

প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে এই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাত লাখের বেশি ভোটে জিতেছেন। এর পরেই ওই এলাকায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠে। তা খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসা বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল ‌ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে। আর সেই কারণেই অভিজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের। রাজ্যে আসা বিজেপির ‘তথ্যানুসন্ধানী’ দলের আহ্বায়ক ছিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। চার জনের ওই দলে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও। মঙ্গলবার ডায়মন্ড হারবারে সেই প্রতিনিধি দল বিজেপিরই ঘরছাড়াদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়ে। ওই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য বিজেপি। অভিযোগ ওঠে অভিজিতের ইন্ধন ছিল বিক্ষোভের আড়ালে।

প্রসঙ্গত, ভোটের সময় থেকেই অভিজিতের সঙ্গে ওই জেলার বিজেপি সভাপতি অভিজিৎ সর্দারের সঙ্গে সংঘাতের কথা প্রকাশ্যে এসে যায়। প্রচারের সময়ে দুই অভিজিৎই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে একে অপরের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। আর ভোটের পরে ‘সন্ত্রাসকবলিত’ বিজেপি কর্মীদের আশ্রয় দেওয়া নিয়েও সংঘাত দেখা যায়। যার পরিণতিতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে বিক্ষোভ এবং প্রার্থী অভিজিতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ রাজ্য নেতৃত্বের।

সপ্তম দফায় ভোটের দিনই ডায়মন্ড হারবার আসনে ব্যাপক কারচুপি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন শুভেন্দু। নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রায় ৪০০ বুথে নতুন করে ভোট নেওয়ার দাবি জানায় বিজেপি। শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, ফলতা বিধানসভার সব বুথেই ফের ভোটগ্রহণ করতে হবে। যদিও কোনও দাবিতেই কর্ণপাত করেনি কমিশন। ভোটের ফলঘোষণার পরে ডায়মন্ড হারবারে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। ওই লোকসভা আসনে ভোটে নানা ভাবে কারচুপির অভিযোগ তোলার পাশাপাশি প্রার্থী অভিজিৎকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। তবে তাঁর সঙ্গে অভিজিৎকে শোকজ় করার কোনও যোগ নেই দাবি করে শুভেন্দু বলে দিলেন, ‘‘দুটো সম্পূর্ণ পৃথক বিষয়। ওই আসনে নানা কারচুপি করে জিতেছে তৃণমূল। তার জন্য আমি মামলা করতে বলেছি। যে কোনও দলের এমন নির্দল প্রার্থীও মামলা লড়ার জন্য আমার সাহায্য চাইলে আমি দেব। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে বিক্ষোভ দেখানো, শোকজ়ের চিঠি এগুলো সাংগঠনিক বিষয়। আমি সেটা নিয়ে কিছু বলতে পারব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement