Rajpur Sonarpur Municipality

কাটমানি দিয়ে যুবনেতা বিয়ে করতে চেয়েছিলেন! দাবি সোনারপুরের পাপিয়ার, এ বার ‘অভিযুক্ত’ লাভলিও

বিয়ের প্রস্তাবই শুধু নয়, তাঁকে নাকি কাটমানি দেওয়ার প্রস্তাব দেন অভিযুক্ত যুবনেতা! রবিবার এমনই দাবি করলেন সোনারপুর কাউন্সিলর পাপিয়া। অভিযোগ করলেন বিধায়ক লাভলি মৈত্রের বিরুদ্ধেও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৫৯
New allegation of Sonarpur TMC councilor against MLA Lovely Moitra and a youth TMC leader

সোনারপুর কাউন্সিলর পাপিয়া হালদার। —ফাইল চিত্র।

শুধু দলের যুবনেতা প্রতীক দে-ই নন, এ বার পর এ বার সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্র ও সোনারপুর পুরসভার পুরপ্রধান পল্লব দাসের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন ওই পুরসভারই ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়া হালদার। তাঁর অভিযোগ, সবটা জেনেও তাঁরা কিছুই করছেন না। সোনারপুর থানাকেও সবটা জানানো হলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাপিয়ার। বিষয়টি নিয়ে যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেন, তার আর্জিও জানিয়েছেন পাপিয়া।

Advertisement

আগেই পাপিয়া অভিযোগ করেছিলেন যে, তিনি বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁকে বিরক্ত করছেন যুব তৃণমূলের নেতা প্রতীক। রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে প্রতীকের বিরুদ্ধে আরও সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “প্রতীক আমাকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা কাটমানি দিতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন আমায় কোনও কাজ করতে হবে না। শুধু বাড়িতে বসে থাকতে হবে আর প্রতি মাসে খামে করে ৫০ হাজার টাকা চলে আসবে।” নিজের অভিযোগের সপক্ষে পাপিয়া প্রতীকের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও জনসমক্ষে নিয়ে এসেছেন। যদিও আনন্দবাজার অনলাইন তার সত্যতা যাচাই করেনি।

রবিবার বিকেলে পাপিয়া দাবি করেন যে, ডিসেম্বরের শুরুতেই বিধায়ক লাভলি মৈত্রকে তিনি এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। হোয়াটসঅ্যাপে তার রিপ্লাই দিয়ে লাভলি নাকি তাঁকে বলেন, “তুমি কী করছ, তা আমি জানি। প্রতীক কী করেছে, তা-ও আমি জানি। এ সব নিয়ে পরে কথা বলব।” কাউন্সিলরের আরও বক্তব্য তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বাড়ির বাইরেই বের হতে পারছি না, থানায় গিয়ে কী ভাবে অভিযোগ করব? স্থানীয় নেতৃত্বের প্রতি তাঁর আর কোনও ভরসা নেই বলেও জানিয়ে দেন পাপিয়া।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতীক অবশ্য জানান, তাঁদের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। এক সঙ্গে ব্যবসা করার কথা ছিল। সেই নিয়েই হোয়াটসঅ্যাপের ওই কথোপকথন বলে দাবি করেন তিনি। দল প্রয়োজনে তদন্ত করতে পারে বলেও জানান অভিযুক্ত যুবনেতা।

এর আগে পাপিয়া বলেছিলেন, ‘‘২০২০ সালে করোনা পরবর্তী সময় থেকে প্রতীক এবং আরও বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতা অসাধু কাজে যুক্ত হন। এবং আমাকে তাঁদের শিখণ্ডি হিসাবে ব্যবহার করা শুরু করেন।’’ কাউন্সিলরের অভিযোগ, তাঁর নাম করে ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়েছে। বিভিন্ন খাসজমি দখল এবং বিক্রিতে তাঁর নাম জড়ানো হয়েছে। তার পর প্রতীক তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। পাপিয়ার কথায়, ‘‘প্রতীক আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং আমি তা প্রত্যাখ্যান করি। কিন্তু তার পর থেকে উনি আমাকে নানা ভাবে অপদস্থ করতে থাকেন।’’ কাউন্সিলরের অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে মত্ত অবস্থায় লোকজন নিয়ে ঢুকে গালাগালি এবং খারাপ ব্যবহার করা হয়।

অভিযুক্ত প্রতীক অবশ্য পাল্টা দাবি করেন যে, তৃণমূল কাউন্সিলর পাপিয়া কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘উনি দামি গাড়ি চড়ছেন, উইক এন্ডে (সপ্তাহান্তে) পার্টি করছেন। কিন্তু ওয়ার্ডের কোনও কাজ করছেন না। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ দলীয় কর্মী এবং সমর্থকেরা।’’ যুব নেতার অভিযোগ, ‘‘কাউন্সিলর সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’ এই ঘটনায় কর্মী এবং সমর্থকেরা আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছেন। একাংশ যেমন প্রতীকের শাস্তির দাবি করছেন, তেমনই আর এক অংশের দাবি, প্রতীককে দেখেই পাপিয়াকে ভোটে জিতিয়েছিলেন তাঁরা। কাউন্সিলর পদ থেকে পাপিয়ার পদত্যাগ দাবি করেছেন তৃণমূলের একাংশ কর্মী-সমর্থকেরা।

আরও পড়ুন
Advertisement