Suvendu Adhikari

তফসিলিদের মারধর করেছে পুলিশ! শুভেন্দুর অভিযোগের পরেই জেলা পুলিশ সুপারকে, নোটিস দিল কমিশন

পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে পুলিশ আইন ভেঙে তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের লোকেদের মারধর করেছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ভূপতিনগর শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:১২
শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে পুলিশ আইন ভেঙে তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের লোকেদের মারধর করেছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর পরেই জেলা পুলিশ সুপার নোটিস ধরাল জাতীয় তফসিলি কমিশন। সাত দিনের মধ্যে পুলিশ সুপারের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে তারা। যদিও পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য জানান, নোটিসের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তাঁর কথায়, ‘‘এমন কোনও নোটিসের কথা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’ পাশাপাশি সমস্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘‘ভূপতিনগরে দুই অভিযুক্তকে পাকড়াও করতে পুলিশ অভিযানে গিয়েছিল। সেই সময় অভিযুক্তেরা গা ঢাকা দেয়। এই অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কাঁথির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। সঙ্গে বহু মহিলা পুলিশও ছিল।’’

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। ওই দিন দুপুরে ভগবানপুর-২ ব্লকের জুখিয়া পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এক্তারপুর গ্রামে যায় ভূপতিনগর থানার পুলিশ। গত বছর ওই এলাকায় একাধিক অশান্তির ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল বিজেপির স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুজিত দেবনাথ-সহ বেশ কয়েকজনের। তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি রয়েছে। পুলিশ সোমবার দুপুরে এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালায়। স্থানীয় বিজেপির দাবি, অনুপ দেবনাথ এবং মঙ্গল দেবনাথ নামে দু’জনের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। সে সময় তাঁরা কেউই ছিলেন না। তাঁদের না পেয়ে বাড়িতে পুলিশ হামলা চালায় বলে অভিযোগ। পরিবারের লোকজনের লোকজনের খাবার ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। বাধা দিতে গেলে মহিলাদের নানা কটূক্তিও করা হয় বলে দাবি।

এর পর মঙ্গলবার সকালে পুলিশি অভিযানের একটি ভিডিয়ো নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন টুইটার) পোস্ট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তিনি লেখেন, ‘‘দলিতেরা সুরক্ষিত নয়। মমতার পুলিশ আইন ভেঙে তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের লোকেদের মারধর করছে।’’ এই পোস্টে শুভেন্দু দাবি করেন, তাঁদের দলের কর্মী অনুপ দেবনাথ এবং মঙ্গল দেবনাথকে বাড়িতে না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত পুলিশ হামলা চালিয়েছে। তারা শুধুমাত্র রান্না করা খাবার ছুড়ে ফেলে দেয়নি, বাড়ির মহিলা সদস্যদের মারধর করেছে। এটা একটা সংগঠিত অপরাধ। এর জন্য ভূপতিনগর থানার ওসি গোপাল পাঠকের বিরুদ্ধে এফআইআর করার দাবি জানিয়েছেন শুভেন্দু। বুধবার আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে এলাকাতেও যান বিরোধী দলনেতা। সেই সময়েই পুলিশ সুপারকে দেওয়া জাতীয় তফসিলি কমিশনের নোটিসের বিষয়টি প্রকাশ্যে এল।

ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘সোমনার ভূপতিনগর থানা থেকে জুখিয়া গ্রামে গিয়ে যে ভাবে তফসিলি পরিবারের মহিলাদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ঘটনার বিষয়ে মঙ্গলবার জাতীয় তফসিলি কমিশনের তরফে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। গোটা ঘটনার বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার, জেলাশাসক ও ভূপতিনগর থানার ওসিকে চিঠি পাঠিয়ে ঘটনার বিবরণ জানতে চাওয়া হয়েছে।’’ বিধায়ক আরও জানান, বৃহস্পতিবার এই ঘটনার তদন্তে জাতীয় তফসিলি কমিশনের প্রতিনিধিরা ভূপতিনগরে যাবেন। কথা বলবেন ‘পীড়িত’ মহিলাদের সঙ্গে।

এই ঘটনার পর পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েছে শাসকদল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক আগেই বলেছেন, ‘‘যাঁরা এলাকায় অশান্তির সঙ্গে যুক্ত, সেই সব হার্মাদদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছিল। বিজেপি নেতা এবং বিধায়কেরা যে রকম অভিযোগ করছেন, তাতে মনে হচ্ছে গোটা ভগবানপুরে এক জনই মাত্র বিজেপি কর্মী রয়েছেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement