Death

কেন গাড়ির চালককে খুন, খুঁজছে পুলিশ

খুনের ঘটনায় এফআইআর-এ নাম থাকা রানাঘাট শহরের বাসিন্দা দীপক স্বর্ণকারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তারপর রবিবার রাত পর্যন্ত নতুন করে কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৪

—প্রতীকী ছবি।

প্রমাণ লোপাটের জন্যই কি রানাঘাটে ব্যবসায়ীকে খুনের পাশাপাশি তাঁর গাড়ির চালককেও খুন করা হয়েছে? নাকি দু'জনকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল আততায়ীরা। বৃহস্পতিবার রাতে জোড়া খুনের ওই ঘটনার পর তদন্তে নেমে রবিবার রাত পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তর অধরাই থেকে গিয়েছে পুলিশের কাছে।

Advertisement

খুনের ঘটনায় এফআইআর-এ নাম থাকা রানাঘাট শহরের বাসিন্দা দীপক স্বর্ণকারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তারপর রবিবার রাত পর্যন্ত নতুন করে কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে আর্থিক লেনদেন বা জমি-সম্পত্তি বিষয়ক কোনও কারণেই এই জোড়া খুন বলে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান।

রানাঘাটের আনুলিয়া পঞ্চায়েতের মনসাতলাকায় নির্মীয়মাণ একটি বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী সুমন চক্রবর্তী (৪০) ও তাঁর গাড়ির চালক রূপম দাসের (৩৮) রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় গত বৃহস্পতিবার রাতে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত দীপক সুমনের পূর্ব পরিচিত। ঘটনার দিন নির্জন এলাকায় ওই নির্মীয়মাণ বাড়িতে দুপুরের দিকে গিয়েছিলেন সুমন ও তাঁর গাড়ির চালক। যে বাড়িতে তাঁরা বসেছিলেন, দীপকই সেই বাড়ির তালা খুলে দিয়েছিল। সন্ধ্যায় পুলিশ যখন মৃতদেহ উদ্ধার করতে যায় তখনও ঘটনাস্থলেই ছিল দীপক।

প্রশ্ন উঠছে, শুধুমাত্র ব্যবসায়ীকেই খুনের উদ্দেশ্য ছিল, নাকি দু'জনকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার আগাম পরিকল্পনা করেছিল আততায়ীরা? তদন্তকারীদের দাবি, ব্যবসায়িক তথা মালিককে চোখের সামনে ধারাল কিছু দিয়ে আঘাত করতে দেখে হয়তো বাধা দিতে গিয়েছিলেন চালক রূপম। অথবা চোখের সামনে খুন হতে দেখে তিনি পালাতে চেয়েছিলেন। যে কারণে তাঁকেও খুন করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে এমনটা মনে হলেও, অন্য একটি প্রশ্নের উত্তরও খুঁজছে পুলিশ। সূত্রের খবর, রূপম শুধু সুমনের গাড়ির চালকই ছিলেন না। ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বস্তও। সেই সুবাদে সুমনের বিভিন্ন ব্যবসার পাশাপাশি জমি, বাড়ি কেনা-বেচার, আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত অনেক তথ্যও জানা থাকতে পারে রূপমের। তাই হয়তো সুমনের পাশাপাশি চালককেও খুনের পরিকল্পনা ছিল। তদন্তে আরও একটি প্রশ্ন ভাবাচ্ছে পুলিশকে। তা হল, সুমন ও রূপমের মোবাইল ফোন উধাও। ফোনের পাশাপাশি সুমনের গলার সোনার চেন, টাকার ব্যাগ, হাতের আংটিও পাওয়া যায়নি। ধৃত দীপককে সাত দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।

রানাঘাট পুলিশ জেলার এক কর্তার কথায়, "জোড়া খুনের ঘটনার পিছনে সন্দেহের তালিকায় অনেকেই রয়েছেন। সবই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গাড়ির চালককে খুন করাটা নিছকই সুমন খুনের একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে খুন বলে এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’’ তবে নিহত গাড়ি চালকের দাদা রূপক দাস বলেন, "ভাইয়ের কোনও শত্রু ছিল না। ও সুমনের গাড়ি চালাত। ঘটনার দিন দুপুর বারোটা নাগাদ আমার সঙ্গে ভাইয়ের মোবাইল ফোনে শেষ কথা হয়েছিল। পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আমার আস্থা রয়েছে। আমি চাই সত্য সামনে আসুক।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement