West Bengal Municipal Election 2022

West Bengal Municipal Election Results 2022: ঘাসফুলে ভরা মাঠেও বিঁধছে গোঁজের কাটা

ভয়ে হোক বা ভক্তিতে, মানুষের রায় যে মোটের উপর তৃণমূলের পক্ষেই গিয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। বরং এর আগের দু’টি ভোটে প্রবল বেগে উঠে আসা বিজেপি প্রায় অন্তর্হিত।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২২ ০৬:৩৭
পুরভোটে জয়ের পরে তৃণমূল সমর্থকদের উল্লাস। বুধবার কৃষ্ণনগরে।

পুরভোটে জয়ের পরে তৃণমূল সমর্থকদের উল্লাস। বুধবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

এক রকম প্রত্যাশিতই ছিল। চমক বলতে খালি তাহেরপুর। ওই একটি বাদে বাকি সব ক’টি পুরসভাই তৃণমূল নিজেদের দখলে নিয়েছে। তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি, পাঁচটি আবার বিরোধীশূন্য। যদিও কৃষ্ণনগর আর বীরনগরে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও গোঁজের চোরকাঁটা বিঁধে আছে। বিরোধীদের দাবি, ব্যাপক ছাপ্পা ভোট না পড়লে ভোটের ফল কিছুটা অন্য রকম হতে পারত।

তবে ভয়ে হোক বা ভক্তিতে, মানুষের রায় যে মোটের উপর তৃণমূলের পক্ষেই গিয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। বরং এর আগের দু’টি ভোটে প্রবল বেগে উঠে আসা বিজেপি প্রায় অন্তর্হিত। বিধানসভা নির্বাচনে শুধু মাত্র নবদ্বীপ, গয়েশপুর, শান্তিপুর ও তাহেরপুরে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। আর লোকসভা ভোটে তো গয়েশপুর ছাড়া বাকি সব পুরসভা এলাকায় ভরাডুবি হয়েছিল তাদের। ফলে সে দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে থেকে লড়াই শুরু করেছিল শাসক দল। বিশেষ করে কৃষ্ণনগর ও দক্ষিণ নদিয়ায়। তারা যেমন উঠে এসেছে, তলিয়ে গিয়েছে বিজেপি। নদিয়ার ১০ পুরসভায় প্রাপ্ত আসনসংখ্যার বিচারে তারা নেমে গিয়েছে তিন নম্বরে, বামেদেরও পরে। যদিও তৃণমূলের এই জয়ের মুকুটে কাঁটা হয়ে রয়ে গিয়েছে জেলাসদর কৃ্ষ্ণনগর পুরসভা। এখানে প্রথম থেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে লড়াইটা ছিল মূলত তৃণমূলের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ বা দলত্যাগী তৃণমূলের। জেলা ও শহর তৃণমূল নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের জেরে বেশ কয়েক জন প্রভাবশালী নেতা ও দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর এ বার দলের প্রার্থিতালিকা থেকে বাদ পড়েন। তাঁদের একাংশ নির্দল প্রার্থী হিসাবে আর অংশ কংগ্রেসে যোগ দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এঁদের মধ্যে শান্তশ্রী সাহা, মনিকা কর, সুপ্রভাত ঘোষ, শশীগোপাল সরকার, দেবানন্দ শর্মা, দিলীপ বিশ্বাসরা যথেষ্ট প্রভাবশালী। সুপ্রভাত ঘোষের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৩ নম্বর বুথের ইভিএমে তাঁর পোলিং এজেন্টের সই মেলেনি বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। প্রার্থীর অভিযোগ, প্রতিবাদ করেও কোনও লাভ হয়নি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে মহকুমা প্রশাসন। আবার নির্দল প্রার্থী হিসাবে একক লড়াইয়ে নেমেছিলেন অসিত সাহা, নূপুর সাহা, অসীমকুমার বিশ্বাস, দিলীপ দাস, অনুপম বিশ্বাস, সুমিত ঘোষ, অয়ন দত্তদের মত পরিচিত মুখেরা। তাঁদের অনেকেই শেষ হাসি হেসেছেন।
কৃষ্ণনগরের মতো বীরনগরেও নির্দল প্রার্থীরা চাপে ফেলে দিয়েছেন শাসক দলকে। গত পুরভোটে বাম সমর্থিত নির্দল হিসাবে জিতেছিলেন শরদিন্দু দেবনাথ। বছর দুয়েক পরে যোগ দেন তৃণমূলে। টিকিট না পেয়ে তিনি ১১ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়ে জিতেছেন। একই কারণে ১২ নম্বরে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে জিতেছেন তৃণমূল কর্মী বাপি দাস। বীরনগরে মোট পাঁচ জন বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন। জিতেছেন দুজন, তবে দলকে বেগ দিয়েছেন সকলেই।
বিক্ষুব্ধরা জয়ী হওয়ায় কিছুটা হলেও বিব্রত তৃণমূল নেতৃত্ব। বিশেষ করে কৃষ্ণনগরের ক্ষেত্রে শাসক দলের যে মুখ পুড়েছে, তা মেনে নিচ্ছেন অনেকেই। তৃণমূলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জয়ন্ত সাহা বলেন, “কেন কয়েকটি ওয়ার্ডের মানুষ মুখ ঘুরিয়ে নিলেন তা আমরা দলীয় স্তরে পর্যালোচনা করে দেখব। তার পর এই বিষয়ে যা বলার বলব।”

Advertisement
আরও পড়ুন
Advertisement