ভাঙন রোধের কাজে অসন্তোষ
River Erosion

মাত্র দু’নৌকা বস্তা দেখে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা 

ভাঙন দুর্গতদের দাবি, এই ভয়াবহ ভাঙনে শয়ে শয়ে পরিবার যখন পথে বসছে, তখন বৃহস্পতিবার মাত্র দু’নৌকো বালির বস্তা ফেলে কাজ করার মানে অর্থের অপচয়।

Advertisement
বিমান হাজরা
শমসেরগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:২৫
বিক্ষোভরত স্থানীয়রা।

বিক্ষোভরত স্থানীয়রা।  নিজস্ব চিত্র।

বালি বোঝাই বস্তা ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা হচ্ছে দেখে প্রবল আপত্তি তুলে শুক্রবার বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন উত্তর চাচণ্ডের গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, এই ভাবে ভাঙন রোধ করা যাবে না। ভাঙন দুর্গত জাহাঙ্গির মোমিন বলেন, ‘‘এই ভাবে গঙ্গাকে রোখা যায়? তামাসা হচ্ছে!’’ কয়েকশো মানুষের বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশ ছুটে আসে। আসেন পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষও। শনিবার থেকে আরও বেশি করে বালির বস্তা ফেলার আশ্বাস দিলে ভাঙন দুর্গতদের বিক্ষোভ কিছুটা শান্ত হয়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ভোর থেকে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে এই গ্রামে। বিডিও-র দেওয়া তথ্য মতো ২২টি বাড়ি নদীতে ধসে পড়েছে। আতঙ্কে বহু পরিবার ঘরবাড়ি ভেঙে গ্রাম ছাড়ছেন। কেউ বা স্কুলে, কেউ বা আত্মীয়ের বারান্দায় ঠাঁই নিয়েছেন।

ভাঙন দুর্গতদের দাবি, এই ভয়াবহ ভাঙনে শয়ে শয়ে পরিবার যখন পথে বসছে, তখন বৃহস্পতিবার মাত্র দু’নৌকো বালির বস্তা ফেলে কাজ করার মানে অর্থের অপচয়। শুক্রবার সকালে বালি বোঝাই একটি নৌকো আসতেই কয়েকশো ক্ষুব্ধ বাসিন্দা একজোট হয়ে বালির বস্তা ফেলতে বাধা দেন।

গতকালের ভাঙনে বাড়ি চলে গেছে জাহাঙ্গির মোমিনের। ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তিনি এ দিন। বলছেন, ‘‘বালির বস্তা ফেলে এই ভয়ঙ্কর গঙ্গায় ভাঙন ঠেকানোর নামে তামাসা হচ্ছে? বালি ফেলা হচ্ছে পাড়ের উপরের দিকে। জলের ধাক্কায় তা সঙ্গে সঙ্গে গড়িয়ে পড়ছে নীচে। তাই নদীর নীচের দিক থেকে বালি বোঝাই বস্তা ফেলা শুরু করতে হবে। পাড় থেকে ১০ মিটার দূরে বালি ফেলতে হবে। তবেই ভাঙন রুখবে। বৃহস্পতিবার দু’নৌকো বালি এসেছিল। নদীতে ফেলার পরে সব ধুয়ে মুছে সাফ। তাই এ ভাবে বালি ফেলতে দেব না। উপরে বালি ফেলা মানে চাপ বাড়ছে তাতে আরও ভাঙছে নদী।’’ তিনি বলেন, ‘‘এ সব পরিকল্পনা করে করা হচ্ছে। আমরা মরছি, ঘর পড়ছে আর এ ভাবে বালি ফেলে নেতারা পয়সা খাচ্ছে। আমরা কথা বলতে ভয় পাই না। কাজ করতে গেলে ভাল ভাবে করতে হবে। না হলে কাজ করতে দেব না আমরা।’’

ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ভাঙন দুর্গত সুবেদ মোমিনও। বলছেন, ‘‘পরশু রাত থেকে ভাঙন হচ্ছে। দু’একটি নৌকো বালি নিয়ে এসে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। এত বড় ভাঙন, এইটুকু বালিতে কিভাবে ভাঙন ঠেকবে? ১০-২০টা নৌকায় বালি এনে এক সঙ্গে ফেলতে হবে নীচের থেকে। আমাদের তো সর্বস্ব চলেই গিয়েছে, যা আছে সব চলে যাক। তা বলে গড়িমসি কাজ করতে দেব না। গোটা পাড় ফেটে রয়েছে। কাজ হচ্ছে, কোথাও কোনও অফিসার নেই। তদারকি নেই। দেখার কেউ নেই। ভাঙনকে গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না।”

বিক্ষোভ থামাতে এদিন ঘটনাস্থলে আসেন শমসেরগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের মইমুর শেখ বলেন, ‘‘শনিবার থেকে পুরোদমে কাজ শুরু হবে। সকলেই পুজোর ছুটির মেজাজে আছেন। পুজোর ছুটির জন্য মজুর সঙ্কট রয়েছে। বিক্ষোভ তাতে থামানো গিয়েছে।’’

ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতারাও এ দিন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ইমাম হোসেন বলেন, ‘‘ভাঙনের অবস্থা ভয়াবহ। ২ নভেম্বর ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখানো হবে ভাঙন রোধের দাবিতে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement