TMC Internal Clash

মমতার বৈঠকের আগেও কোন্দল, তৃণমূলের সভায় হাজির হলেন না তাপস-ঘনিষ্ঠেরা

এই পরিস্থিতিতে ব্লক নেতৃ্ত্বের তরফে বৃহস্পতিবার বর্ধিত সভা ডাকা হয়। বিরোধী গোষ্ঠীর দাবি, সেই সভায় ব্লকের একাধিক প্রধান ও উপপ্রধান উপস্থিত ছিলেন না।

Advertisement
সুস্মিত হালদার
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ ০৬:১১
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে এই গোষ্ঠী কোন্দল।

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে এই গোষ্ঠী কোন্দল। — ফাইল চিত্র।

ব্লক নেতৃ্ত্বের ডাকে সাড়া না দিয়ে সভা বয়কট করলেন রানাঘাট ১ ব্লকের একাধিক প্রধান, উপপ্রধান ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। সেই সঙ্গে ব্লক কমিটি একাধিক সদস্য ইস্তফাও দিয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। আজ, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে এই গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব।

দিন কয়েক আগেই রানাঘাট ১ ব্লকের সাত অঞ্চল সভাপতি পরিবর্তন হয়। তার আগে আরও এক অঞ্চলের সভাপতি বদল হয়েছিল। এই নিয়ে দলের মধ্যে বিতর্ক দানা বাঁধে। মুখ খোলেন বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরোধী বলে পরিচিত, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস ঘোষ থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দীপক বসুও। নতুন অঞ্চল সভাপতির নাম ঘোষণার পাশাপাশি নতুন ব্লক কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছিল। দলীয় সূত্রের দাবি, সেখানে নাম থাকা একাধিক সদস্য এরই মধ্যে নেতৃত্বকে হোয়াটসঅ্যাপ মারফত পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে ব্লক নেতৃ্ত্বের তরফে বৃহস্পতিবার বর্ধিত সভা ডাকা হয়। বিরোধী গোষ্ঠীর দাবি, সেই সভায় ব্লকের একাধিক প্রধান ও উপপ্রধান উপস্থিত ছিলেন না। বেশ কয়েক জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যও অনুপস্থিত ছিলেন। গরহাজির সদস্যদের এক জন, কালীনারায়ণপুর-পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপা দাস ঘোষের দাবি, “বর্তমান নেতৃত্ব আমাদের কোনও মতামতকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কোনও বিষয়ে যোগাযোগ পর্যন্ত করেন না। কেন যাব ওই বৈঠকে?”

সদ্য অপসারিত আনুলিয়া অঞ্চল সভাপতি পিন্টু পালকে ব্লক কমিটির সদস্য করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে তাঁর দাবি। তিনি আবার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যও। এ দিন বৈঠকে উপস্থিত না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, “গত বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর যারা আমাকে খুন করতে চেয়েছিল, তাদেরই এখন নেতা করা হচ্ছে। কেন যাব ওখানে?”

যাঁরা এ দিন ব্লকের বৈঠক বয়কট করলেন, তাঁরা প্রায় সকলেই তাপস ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। দলেরই একটা অংশের দাবি, তাঁকে ব্লক সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকেই তাঁর ঘনিষ্ঠেরা দলের বৈঠকগুলিতে গরহাজির হচ্ছেন। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না তিনিও। তাঁর দাবি, “এখন পঞ্চায়েত সমিতির ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছে। সেখানেই ব্যস্ত ছিলাম।” টুর্নামেন্টের জন্য দলের কর্মসূচিতে অনুপস্থিত রইলেন? তাপসের দাবি, “আমাকে ওরা ডাকেনি।”

এই এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল দীর্ঘ দিনের। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে অনেক জায়গাতেই দলের প্রার্থী শঙ্কর সিংহের বিরুদ্ধে ভোট সংগঠিত করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁরই একদা-ঘনিষ্ঠ তাপস সাহার লোকজনের বিরুদ্ধে। এ বার তাপসকে সরিয়ে একদা তাঁরই অনুগামী বলে পরিচিত বারাসত গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শেফালী বিশ্বাসকে ব্লক সভাপতি করা হয়েছে। যদিও তাঁর দাবি, “আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। সবাই একসঙ্গেই আছি।” এ দিনের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দু’এক জন প্রধান-উপপ্রধান ও মুষ্টিমেয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আসেননি। তাঁরা পঞ্চায়েত সমিতির খেলায় ব্যস্ত ছিলেন। আমার সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে।”

আরও পড়ুন
Advertisement