TMC Internal Conflict

‘দ্বন্দ্ব’ নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক জেলা স্তরে

দিন কয়েক আগে নিজেদের পদ থেকে গণ ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন সফিউজ্জামান ও তাঁর অনুগামীরা।

Advertisement
মফিদুল ইসলাম
শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:২২
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নওদার জনপ্রতিনিধি ও দলের পদাধিকারীদের নিয়ে ম্যারাথন বৈঠক করলেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। মঙ্গলবার দুপুরে বহরমপুরে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ ইউনিটের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার, চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী, মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান সহ জেলা তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতা। নওদা ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সফিউজ্জামান শেখ, নওদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহিদুল ইসলাম সহ বিভিন্ন অঞ্চলের প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সহ অন্য সদস্য, দলের বিভিন্ন স্তরের পদাধিকারীরাও বৈঠকে হাজির ছিলেন। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ওই বৈঠক। বৈঠক শেষে বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ ইউনিটের সাংগঠনিক চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, “ব্লকে কিছু নেতা জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে মান-অভিমান ছিল। সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সে সব মিটে গিয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বকেও সে কথা জানাব।”

Advertisement

দিন কয়েক আগে নিজেদের পদ থেকে গণ ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন সফিউজ্জামান ও তাঁর অনুগামীরা। ব্লক তৃণমূলের দাবি, সোমবার থেকে নওদা পঞ্চায়েত সমিতি ও তৃণমূলের দখলে থাকা ন’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে যাননি তৃণমূলের কোনও জনপ্রতিনিধি। সোমবার বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি ও দলের পদাধিকারীরা সই, স্বাক্ষর করে ইস্তফাপত্র তুলে দেন ব্লক সভাপতি সফিউজ্জামানের হাতে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে জেলা পরিষদের সভাধিপতি, অতিরিক্ত জেলাশাসক সহ সংশ্লিষ্ট একাধিক জায়গায় ওয়টস্যাপে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন সফিউজ্জামান। মঙ্গলবারের বৈঠক শেষে ইস্তফা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে দলীয় সূত্রের খবর।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা বলেন, “দলের যে সমস্ত নেতৃত্ব বা জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের জায়গায় থেকে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন, তাঁদের উচিত নিজেদের জায়গায় থেকে কাজ করা। হয়তো কোনও কারণে তাঁরা ইস্তফা দেওয়ার কথা বলেছেন, কিন্তু দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পর সিদ্ধান্ত বদল হওয়াটা স্বাভাবিক।”

এ দিন জেলার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সফিউজ্জামান বলেন, “আমাদের অভাব, অভিযোগ, দাবির কথা জেলা নেতৃত্বকে সমবেত ভাবে জানিয়েছি। জেলার নেতারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমরা তাঁদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে চেয়ে আছি। দল আমাদের ইস্তফা না দিয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছে।’’

তৃণমূল সূত্রের খবর, সম্প্রতি সর্বাঙ্গপুরে গুলি চালানো ও বিডিও অফিসে সরকারি কর্মীকে মারধরের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ব্লক তৃণমূল সভাপতি ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। ফের দলের কোন্দলও প্রকাশ্যে এসেছে। ওই দুই ঘটনার পরে বহরমপুরে সফিউজ্জামানের গাড়ি তল্লাশি হয় ও এসপি-র দফতরে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা। ওই দিন রাতেই গ্রেফতার করা হয় ওই দুই ঘটনায় অভিযুক্তদের। জেলা পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, “প্রশাসনিক বিষয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।”

মঙ্গলবার সফিউজ্জামান বলেন, “কেউ কেউ মনে করছেন জনপ্রতিনিধিদের উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই, তা ভুল। জনপ্রতিনিধিরা যেমন ভুল করেছেন, তার দায় স্বীকার করছি। তেমন সরকারি কর্মীরাও স্বচ্ছ ভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন না। সবটাই আমাদের জানা।” অন্য দিকে বিধায়ক সাহিনা মমতাজ খান বলেন, “আমার সঙ্গে এ বিষয়ে কারও কথা হয়নি। আমি কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিই না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ, ষড়যন্ত্র পর্যন্ত করা হচ্ছে। দলকে সবটাই জানিয়েছি।”

এ বিষয়ে বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ ইউনিটের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকারের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Advertisement
আরও পড়ুন