TMC

পুরসভা নিয়ে চর্চা শুরু দলের অন্দরে

যে সব এলাকায় তৃণমূলের ফল খারাপ হয়েছে সে সব এলাকায় দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের উপরে শাস্তির খাঁড়া নেমে আসবে বলে দলের অন্দরে জল্পনা চলছিল।

Advertisement
সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ০৭:০৩

—প্রতীকী ছবি।

গত লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদে সাফল্য পেয়েছে শাসক দল তৃণমূল। ভাল ফলের মাঝেও মন খারাপের খবর হচ্ছে জেলার ৮ টি পুরসভার মধ্যে ৭ টিতে শোচনীয় পরাজয় হয়েছে শাসক দলের।

Advertisement

যে সব এলাকায় তৃণমূলের ফল খারাপ হয়েছে সে সব এলাকায় দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের উপরে শাস্তির খাঁড়া নেমে আসবে বলে দলের অন্দরে জল্পনা চলছিল। যে সব পুরসভা এবং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভোটের ফল খারাপ হয়েছে সে সব এলাকার ফলের পর্যালোচনা করে নেতা ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে রবিবার কলকাতায় শহিদ সমাবেশে মন্তব্য করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার পরেই মুর্শিদাবাদ জুড়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। কোন কোন পুরসভা এলাকায় বা পঞ্চায়েতে দলের ফল খারাপ হয়েছে, কাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে সেই চর্চাও চলছে দলের অন্দরে।

রবিবার ধর্মতলায় ‘শহিদ সমাবেশে’র মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমি আর এক বার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আপনাদের কথা দিচ্ছি যারা এই নির্বাচনে পঞ্চায়েত বা পুরসভার কাউন্সিলর চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান থেকেও মানুষকে বোঝাতে অক্ষম হয়েছেন বা তাদের নির্দিষ্ট এলাকা থেকে প্রত্যাশিত বা আশানুরূপ ফল হয়নি। একই ভাবে আমরা শহর সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।’’

রবিবার বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘আমরা আমাদের স্তরে পর্যালোচনা করেছি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের স্তরে পর্যালোচনা করেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে পর্যালোচনা করেছেন, এটা তো তিনি ঘোষণাও করেছেন।’’ অপূর্ব বলেন, ‘‘যেমন নির্দেশ হবে সে রকম ব্যবস্থা হবে।’’

জেলায় সার্বিক ভাল ফল করলেও তৃণমূল বিভিন্ন পুরসভায় খারাপ ফল করেছে। সে বিষয়ে কী ব্যবস্থা হবে?

অপূর্বর দাবি, ‘‘সেটা সারা বাংলাব্যাপী হয়েছে। নিশ্চিত ভাবে আমাদের সেগুলিকে ঠিক করতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে। নিজের ভুলভ্রান্তি স্বীকার করতে হবে। দিদি এটাই আমাদের করতে বলেছেন। এটা নিশ্চিত ভাবে আমরা করব।’’

মুর্শিদাবাদ জেলায় ৮ টি পুরসভা রয়েছে। একমাত্র ডোমকল পুরসভা এলাকায় তৃণমূল কিছুটা ভাল ফল করেছে। বাকি পুরসভাগুলিতে গত লোকসভায় তৃণমূল ধরাশায়ী হয়েছে।

বহরমপুর পুরসভার ২৮ টি ওয়ার্ডের সব কটিতেই তৃণমূল পরাজিত হয়েছে। মুর্শিদাবাদ পুরসভার ১৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩ টিতে বিজেপি এবং ৩ টিতে তৃণমূল লিড পেয়েছে। জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ পুরসভার ১৭ টি ওয়ার্ডেই তৃণমূলকে পিছনে ফেলে লিড পেয়েছে বিজেপি।

জঙ্গিপুর পুরসভার ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিতেই পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। বেলডাঙা পুরসভাতেও তৃণমূল ধরাশায়ী হয়েছে।

কান্দি পুরসভার ১৮ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫ টিতে তৃণমূল লিড পেয়েছে। ধুলিয়ান পুরসভার ২১ টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটিতে তৃণমূল লিড পেয়েছে।

বহরমপুরের পুরপ্রধান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা হয়তো বহরমপুরের মানুষকে ঠিক মতো বোঝাতে পারিনি। তাই আমরা ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের নেতা এবং নেত্রী যে নির্দেশ দেবেন, যে শাস্তি দেবেন, তা আমরা মাথা পেতে নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement